• সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে খুশি রোগীদের দাবি, পরিষেবা এবার স্বাভাবিক হোক
    বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে যোগ দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে দারুণ খুশি রোগী থেকে তাঁদের পরিজন এবং সাধারণ মানুষও। সর্বোচ্চ আদালতকে তাঁরা অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। শহরের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে এই নির্দেশ নিয়ে নিজেদের উচ্ছ্বাস গোপন করেননি রোগী ও বাড়ির লোকজন। 

    পায়ে চোটের জন্য‌ আর জি করে ভর্তি ছিলেন রাজারহাটের নাজিমা বিবি। তিনি ও তাঁর মা মনোয়ারা বিবি এদিন হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছিলেন। ট্রমা সেন্টারের সামনে দু’জনেই বললেন, ‘সিনিয়র চিকিৎসকরা দেখেছেন। চিকিৎসা নিয়ে বলার কিছু নেই। যথাসাধ্য যত্ন করেছেন। কিন্তু ফাঁকা শুনশান ওয়ার্ড। কীভাবে কেটেছে আমরাই জানি! সুপ্রিয় কোর্টকে ধন্যবাদ, মঙ্গলবার থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ নাজিমা বলেন, ‘এক মেয়েকে হারানোর দুঃখ শুধু ওঁদের নয়, আমাদের সবার। কিন্তু, ওঁরা কী চান, ওঁদের কর্মবিরতির জন্য আরও অনেক মেয়ের প্রাণ চলে যাক?’ 

    পিজি হাসপাতালের আউটডোরে নদীয়া থেকে হার্টের ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন অসিতকুমার হালদার। লাইনে দাঁড়িয়ে বলছিলেন, ‘দেখুন, যা হয়েছে সেটা তো অন্যায়। বিচার আমরাও চাইছি। কিন্তু এভাবে মানুষের ভোগান্তি করে নয়। আমার মনে হয়, সুপ্রিম কোর্ট একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জুনিয়র চিকিত্সকদের অবশ্যই কাজে ফেরা দরকার।’ 

    অসিতবাবুর পাশেই এক রোগী কোমরে বেল্ট পরে আর দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে পারলেন না। একটা সময় তিনি রাস্তাতেই বসে পড়লেন। লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন পাঁচলা থেকে আসা বৃদ্ধ মোস্তাক। বলছিলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট সঠিক নির্দেশ দিয়েছেন বলেই মনে করছি। আন্দোলন নিয়ে আমাদের বক্তব্য নেই। কিন্তু রোগী পরিষেবা অবশ্যই স্বাভাবিক হওয়া দরকার।’ আর জি করে মেয়েকে দেখাতে আসা গোবরডাঙার সামাদ মণ্ডল বলেন, ‘জানেন, কত মানুষ কর্মবিরতির খবর জেনে অসুস্থতা সত্ত্বেও স্রেফ ভয়ে কলকাতার সরকারি হাসপাতালমুখো হচ্ছেন না! আমাদের কথা ভেবে দেখুন। আমাদের যা আর্থিক অবস্থা, কোনওভাবেই প্রাইভেটে চিকিৎসা করার ক্ষমতা নেই। এভাবে দিনের পর দিন চললে মৃত্যু বেড়েই চলবে। চিকিৎসকদের কাজে যোগ দিতে সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, তাকে শত সহস্র ধন্যবাদ জানাই। রাজ্যের গরিব মানুষের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার জন্য এই নির্দেশ দরকার ছিল।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)