• বেআইনিভাবে হাউস স্টাফ নিয়োগে সন্দীপের কামাই ১০ কোটির বেশি, তদন্তে জেনেছে সিবিআই
    বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের একের পর এক দুর্নীতির পর্দা ফাঁস হচ্ছে। হাসপাতালে হাউস স্টাফ নিয়োগেও দুর্নীতি করে তিনি বিপুল পরিমাণ টাকা কামিয়েছেন। নিয়মকানুনকে তোয়াক্কা না করে এবং কমিটিকে না জানিয়ে তিনি দিনের পর দিন হাউস স্টাফ নিয়োগ করেছেন। এমনটাই দাবি করেছে সিবিআই। এখনও পর্যন্ত বেআইনিভাবে ৮৪ জনকে নিয়োগের তথ্য পেয়েছে তারা। এর বিনিময়ে সন্দীপ বেআইনিভাবে কত টাকা রোজগার করেছেন, তার হিসেব কষছেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিকভাবে এই অঙ্ক ১০ কোটি  ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। একইসঙ্গে সোমবার সিবিআইয়ের একটি টিম হাসপাতালে গিয়ে সেখানকার ক্যান্টিন পরীক্ষা করে। এখানকার ঢোকা-বেরনোর রাস্তা ঘুরে দেখেন অফিসাররা। অভিযোগ, বকলমে এই ক্যান্টিনটি চালাতেন সন্দীপের দেহরক্ষী আফসার।

    সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, হাউস স্টাফ নিয়োগের জন্য ১৩ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করা হয় আর জি করে। ওই কমিটির কাজ ছিল হাউস স্টাফশিপের জন্য যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের ইন্টারভিউ নেওয়া, মার্কশিট পরীক্ষা করা, মার্কস যাচাই করা ইত্যাদি। মেরিট লিস্ট তৈরি হওয়ার পর এই কমিটির সদস্যদের সই করতে হতো। তারপর তা প্রকাশ করার কথা ছিল হাসপাতালের। কিন্তু সন্দীপ জমানায় এর কোনওটাই হয়নি বলে দাবি এজেন্সির। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ লোকজনই যোগাযোগ করতেন কারা কারা হাউস স্টাফ হতে চান। যাঁরা রাজি হতেন, তাঁদের কাছ থেকে পনেরো থেকে কুড়ি লক্ষ টাকা নিতেন অভিযুক্তরা। তাঁদের কোনও ইন্টারভিউ দিতে হতো না। অভিযোগ, তালিকা তৈরি করে সেটি তদানীন্তন অধ্যক্ষের কাছে নিয়ে যেতেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা। কমিটির সই ও অনুমোদন ছাড়াই ওই লিস্ট বের করে দিতেন সন্দীপ। এভাবেই চক্র গড়ে তিনি হাসপাতালে হাউস স্টাফ নিয়োগের ব্যবসা খুলেছিলেন বলে জানতে পেরেছে তদন্তকারী সংস্থা। তাই এমবিবিএসে ভালো মার্কস পেয়ে উপরের দিকে থাকা ছাত্রছাত্রীরা হাউস স্টাফ হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেতেন না। এই নিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ জন্মায়। হাউস স্টাফ নিয়োগে দুর্নীতি করে আসা টাকা সন্দীপ কোথায় বিনিয়োগ করেছেন, সেটি তাঁকে জেরা করে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, একটা অংশ এখানে সম্পত্তি কিনে বা ব্যবসায় খাটালেও বাকিটা বিদেশে পাচার করে দিয়েছেন। এদিকে একমাস হয়ে গেলেও তদন্ত ঠিকমতো না এগনোয় এবং কেউ ধরা না পড়ায় বহিরাগত কয়েকজন মহিলা সিবিআইয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান।  
  • Link to this news (বর্তমান)