• দুই দপ্তরের টানাপোড়েন, বন্ধ ইকো পার্ক, জঙ্গলে ঢেকেছে শিশুদের খেলার জায়গা
    বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: বেশ কয়েক বছর আগে নিউটাউনের ইকো পার্কের ধাঁচে হাওড়ার ডুমুরজলায় তৈরি হয়েছিল এইচআইটি পার্ক। এই পার্ককে পরবর্তীকালে ষষ্ঠীনারায়ণ ইকোপার্ক হিসেবে নামকরণ করা হয়। মাত্র এক বছর আগে এই পার্কের আধুনিকীকরণ হয়। কিন্তু পার্ক কার দখলে থাকবে, তা নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে কেএমডিএ ও পুরসভার মধ্যে। ফলে দুই দপ্তরের টানাপোড়েনে গত দু’মাস ধরে বন্ধ রয়েছে এই ইকোপার্ক। কচিকাঁচাদের খেলার জায়গা ঢেকেছে জঙ্গলে। দ্রুত পার্ক চালু করার দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।

    হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়াম থেকে বেশ কিছুটা দূরে মৎস্য দপ্তরের অধীনে থাকা একটি বড় জলাশয়কে ঘিরে ছিল প্রায় দুই বিঘা আয়তনের ডাম্পিং গ্রাউন্ড। বছর ছয়েক আগে এলাকাটিকে ঘিরে একটি পার্কের রূপ দেওয়া হয়। প্রথমে নামকরণ হয়েছিল এইচআইটি পার্ক। পরে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর এই পার্কের দায়িত্ব হাওড়া পুরসভার হাতে তুলে দেয়। স্থানীয়দের দাবি মেনে গত বছর পার্কের ঢালাও সংস্কার করে পুরসভা। সোলার প্যানেল বসানো, মর্নিং ওয়াক লেনের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি ছোটদের জন্য স্লাইডার, দোলনাও বসানো হয়। আধুনিক মানের ফাউন্টেন বসানো হয় এখানে। ঝিলকে ঘিরে বোটিং চালু করার পরিকল্পনা করেছিল পুরসভা। এই পার্কেই সরকারি উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল ইকো কার্নিভাল ক্রিসমাস। সেখানে ১৩ দিনে প্রায় দু’লক্ষ মানুষের ভিড় হয়। এছাড়াও প্রতিদিন প্রায় ৬০০ থেকে ৮০০ মানুষের ভিড় লেগেই থাকত এই পার্কে। ফলে টিকিট থেকেও আয় বাড়ছিল পুরসভার। 

    মাস দুয়েক আগে এই পার্কের দায়িত্ব নিতে চেয়ে কেএমডিএ চিঠি দেয় হাওড়া পুরসভাকে। ফলে পার্কের যাবতীয় দায়ভার ছেড়ে দিয়েছে পুরসভা। তারপর থেকেই তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে ডুমুরজলার ইকোপার্ক। বর্ষায় মর্নিং ওয়াক করার লেন ভরে গিয়েছে আগাছায়। দোলনাগুলির অবস্থাও বিশেষ ভালো নয়। বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে পুরসভার তৈরি ফুড কাউন্টার। পার্কের নিরাপত্তা রক্ষীদের কথায়, ‘আগে সকাল-বিকেল দুই বেলাই প্রচুর মানুষ আসতেন। এখন আমাদের সারাদিন বসে থাকা ছাড়া কাজ নেই। সকালে কয়েকজন শুধু হাঁটতে আসেন এখানে। পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে সবকিছু’। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই বলেন, ‘আগে এই পার্কে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। এখন সাপের উপদ্রবে বাড়ির কচিকাঁচাদের সেখানে নিয়ে যাওয়া যায় না’।

    হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘এই পার্কের দায়িত্ব আর পুরসভার হাতে নেই। তাই বাধ্য হয়ে বন্ধ রাখতে হয়েছে। তবে পার্ক ফেরত পাওয়ার জন্য আমরা দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি’। 
  • Link to this news (বর্তমান)