• ঘুটিয়ারি স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের জের, প্ল্যাটফর্মের বেআইনি দোকান ‘বয়কট’ করতে যাত্রীদের আবেদন রেলের
    বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রচার অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। স্টেশন চত্বরে বন্ধ করা যায়নি অবৈধ দোকানের রমরমা। লাগাতার সচেতনতামূলক প্রচার, উচ্ছেদ অভিযান সহ বিবিধ উপায়ে প্ল্যাটফর্ম চত্বর ফাঁকা করতে পারছে না রেল। নিরুপায় হয়ে এবার যাত্রীদের ঘাড়েই বন্দুক রাখল রেল। যাত্রীদের উদ্দেশে সরাসরি এই সব অবৈধ দোকান ‘বয়কটের’ আবেদন জানাল কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে লিখিত বিবৃতি জারি করেছে রেল। নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে খোদ পূর্ব রেলের অন্দরে। কারণ সাধারণ ট্রেন যাত্রীদের কাছে রেলের আবেদন, বেআইনি দোকান কিংবা স্টল থেকে খাবার বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনবেন না। শুধুমাত্র অনুমোদিত স্টল থেকেই যাবতীয় সামগ্রী কিনুন। সেখানে ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান প্রোডাক্টের’ কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। যার ফলে দেখা দিয়েছে সংশয়। কারণ, ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান প্রোডাক্ট’ নাম দিয়ে চালু হওয়া সংশ্লিষ্ট স্টলগুলিতে যাত্রাপথে জরুরি বেশিরভাগ পণ্যই মেলে না বলে যাত্রীদের অভিযোগ। তাহলে যাত্রীরা কোথা থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনবেন? সেই প্রশ্ন উঠছে। 

    তবে অবৈধ দোকান বারবার রেল ও যাত্রীদের বিপাকে ফেলেছে।  রবিবারই শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ঘুটিয়ারি শরিফ স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে একটি অবৈধ চায়ের দোকানে আগুন লাগে। যার জেরে পুজোর আগে এমন একটি ছুটির দিনে চম্পাহাটি এবং ক্যানিংয়ের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগুন নেভাতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েন অসংখ্য ট্রেন যাত্রী। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ফের প্ল্যাটফর্মে গজিয়ে ওঠা স্টল ও দোকানের রমরমা নিয়ে না ধরি মাছ, না ছুঁই পানি অবস্থান নিল রেল।  

    প্রসঙ্গত, প্ল্যাটফর্মে আগুন জ্বালিয়ে খাবার কিংবা পানীয় তৈরি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও  ত্রিপল, প্লাইউড, প্লাস্টিকের মতো দাহ্য উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি স্টল চালান অবৈধ বিক্রেতারা। যা ট্রেন যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তার পরিপন্থী বলে মনে করেন রেল কর্তাদের একাংশ।  পূর্ব রেল এদিন লিখিতভাবে স্বীকার করে নেয়, প্ল্যাটফর্মে আগুন না জ্বালানোর জন্য বারবার প্রচারাভিযান চালিয়েও সাফল্য আসেনি। শিয়ালদহ ডিভিশনে বিধাননগর, দমদম, বেলঘরিয়া, বনগাঁ, রানাঘাট, পার্কসার্কাস, যাদবপুর, বালিগঞ্জ, ক্যানিং সহ একাধিক স্টেশনে এই অবৈধ স্টলগুলোর কারণে প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। 

    অন্যদিকে হাওড়া ডিভিশনের অন্তর্গত বালি, উত্তরপাড়া, কোন্নগর, রিষড়া, শেওড়াফুলি, চন্দননগর, হুগলি, ব্যান্ডেল প্রভৃতি স্টেশনেও একই কারবার দিব্যি চলছে। বহু প্ল্যাটফর্মে স্থানাভাব নেই। দাঁড়ানোর পর্যাপ্ত জায়গা থাকে না। এই পরিস্থিতিতে একই সময়ে দু’টি ট্রেন দুটি প্ল্যাটফর্মে এলে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। যে কোনও সময় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
  • Link to this news (বর্তমান)