এদিন মিডিয়াকে বলা হয়েছে, 'সিবিআইয়ের নেওয়া তদন্তভারে কোনও অগ্রগতি হয়নি, বিচারের এই দীর্ঘসূত্রিতার ভয় আমরা গোড়া থেকেই পাচ্ছিলাম। হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট, কলকাতা পুলিস থেকে সিবিআই! তদন্তের হাতবদল হলেও অথচ বিচার এখনও অধরা। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য় সরকার ও সরকারের উকিল কপিল সিব্বল, আমাদের জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন ও কর্মবিরতিকে যেন তেন প্রকারে থামানোর ন্যক্কারজনক ভূমিকা নিতে দেখলাম। ওঁরা বলেছেন, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে মানুষ মারা যাচ্ছেন, রোগী পরিষেবা ব্য়হত হচ্ছে! ইত্য়াদি, আমরা স্পষ্ট আরও একবার মনে করিয়ে দিতে চাই, রাজ্য়ের প্রতিটি মেডিক্য়াল কলেজে, রোগী পরিষেবা চালু আছে। সিনিয়র ডাক্তাররা অক্লান্ত পরিশ্রম করে পরিষেবা দিচ্ছেল লাখো মানুষকে। আমরা রাজ্য়বাসীকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে, ২৪৫টি। যার মধ্য়ে মেডিক্য়াল কলেজ মাত্র ২৬টি। মোট জুনিয়র ডাক্তারদের সংখ্য়া ৭৫০০-র বেশি নয়। পশ্চিমবঙ্গে মোট রেজিস্টার্ড ডাক্তারের সংখ্য়া প্রায় ৯৩ হাজার। মাত্র কয়েকটি মেডিক্য়াল কলেজে, সিনিয়র ডাক্তাররা পরিষেবা দিচ্ছেন, সেখানকার জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতিতে আছেন বলে, গোটা স্বাস্থ্য় ব্য়বস্থা ভেঙে পড়ছে! এই কথা তাহলে কী করে বলা হচ্ছে! অর্থাত্ সরকার মিথ্য়া কথা বলছে। সুপ্রিম কোর্টে মিথ্য়া বক্তব্য় রাখা হচ্ছে। আমরা মনে করছি আমাদের আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে। বিপুল সংখ্য়ক মানুষের সমর্থনকে বিপথে চালনা করা হচ্ছে। এক ন্যক্কারজনক প্রচেষ্টা। আমরা সরকারি কৌঁসুলি কপিল সিব্বল, স্বাস্থ্য় দফতর তথা স্বাস্থ্য়মন্ত্রীকে ধিক্কার জানাচ্ছি। সুপ্রিম কোর্টকেও বিপথে চালনার প্রচেষ্টাকে। আমরা সরকার তথা সুপ্রিম কোর্টকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে, জুনিয়র ডাক্তাররা গোটা স্বাস্থ্য় ব্য়বস্থার মূলস্তম্ভ নন। তাঁরা শিক্ষাণবিশ মাত্র। যদি কেবল জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে স্বাস্থ্য় ব্য়বস্থা ভেঙে পড়ে তাহলে রাজ্য়ের সরকারি হাসপাতগুলিতে যথেষ্ট সংখ্য়ক সিনিয়র ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য়কর্মীর অভাব রয়েছে। স্বাস্থ্য় ব্য়বস্থার পরিকাঠামোগত দুর্দশা স্পষ্ট করে। তার দায় স্বাস্থ্য় দফতর ও স্বাস্থ্য়মন্ত্রী এড়াতে পারে না।'
ডাক্তাররা আরও বলেন যে, 'আজ মুখ্যমন্ত্রী সব ভুলে মানুষকে উৎসবে ফিরতে বলেছেন। আমরা তার এই বক্তব্যের প্রতি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অভয়ার বিচারহীন শবের উপর দাঁড়িয়ে উৎসবের ডাক দেওয়া ন্যক্কারজনক নির্লজ্জতার পরিচায়ক। বিচার না পাওয়া অবধি উৎসবে ফেরার আবেদন অশ্লীল, অমানবিক। মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে এই বক্তব্য ফিরিয়ে নিতে হবে। পাশাপাশি মাননীয়া যেভাবে অভয়ার পরিজনকেও মিথ্যাবাদী বলে অভিহিত করতে চেয়েছেন, আমরা তাকেও তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। মৃতার মা বাবা তার মেয়ের ন্যায় বিচারের দাবির আন্দোলনের দায়িত্ব আমাদের হাত তুলে দিয়ে গেছেন, তাই এর শেষ না দেখে আমরা আন্দোলন থেকে পিছু হটতে পারিনা। আমরা সরকারের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, আগামিকাল ৫টার মধ্যে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ করে আমাদের দাবীগুলিকে মিটিয়ে দিক। তবেই আমরা কর্মবিরতি প্রসঙ্গে ওনার আবেদন নিয়ে ভেবে দেখতে পারি। অন্যথায় আমরা বুঝব, সরকার আদৌ চান না অচলাবস্থা কাটুক। সেক্ষেত্রে রাজ্য জুড়ে যে পরিস্থিতি তৈরী হচ্ছে, তার জন্য আমরা সরকারকেই দায়ী করতে বাধ্য হব।'