• আরজি করে কোভিড ফান্ডের টাকায় জিম, চলত র‍্যাগিং-ও!
    এই সময় | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • কোভিড ফান্ডের টাকাতেও আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতি হয়েছে। তদন্তে নেমে এমন তথ্য জানতে পারল সিবিআই। করোনার মোকাবিলায় সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিকে বিশেষ আর্থিক তহবিল অনুমোদন করেছিল রাজ্য। অভিযোগ, আরজি কর হাসপাতালে সেই ফান্ডের যতাযথ ব্যবহার হয়নি। আইসোলেশন রুমের পরিকাঠামো উন্নয়নের বদলে, তৈরি করা হয়েছিল অত্যাধুনিক জিম। কিছুদিন পরে সেখানে শরীরচর্চার বদলে চলতো র‍্যাগিং।এমনকী, মেডিক্যাল সরঞ্জাম কেনার বদলে সরকারি টাকাতে ফ্রিজ থেকে শুরু করে সোফা, টেবিল সবই কেনা হয়েছিল। স্বাস্থ্য ভবনের ছাড়পত্র না নিয়ে এ ভাবেই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তাতে যে টাকা খরচ হতো, পরে তা নানা হাত ঘুরে সন্দীপের কাছে পৌঁছে যেত বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।

    আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির অভিযোগে জুনিয়র ডাক্তার এবং চিকিৎসকদের একাংশ যা নিয়ে বার বার ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন। স্বাস্থ্য ভবনের দুই বড়কর্তার কাছে এ বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ সহ নালিশও করা হয়েছিল। কিন্তু, অনিয়মের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত কোনও তদন্ত হয়নি।

    আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের কথায়, ‘আরজি কর হাসপাতালে সন্দীপ-ই ছিলেন শেষ কথা। সেখানে আর কারও বক্তব্য ধোপে টিকত না। যাঁরা আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে সরব হতেন, তাঁদের ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল হেল্থ রিক্রুমেন্ট বোর্ড’-এর এক কর্মকর্তার তরফে বদলির হুমকি দেওয়া হতো বলেও জানতে পেরেছে সিবিআই। সে কারণে সন্দীপের বিরুদ্ধে চট করে কেউ মুখ খুলতে পারতেন না।

    সিবিআই সূত্রে খবর, প্রশাসনিক ভবনে বছর তিনেক আগে কোভিডের জন্য বরাদ্দ টাকায় অত্যাধুনিক জিম তৈরি করা হয়। মাস কয়েক পরে জিমে আর কেউ না যাওয়ায় তা সন্দীপ ঘনিষ্ঠদের দখলে চলে গিয়েছিল। সেখানে দিন রাত চলত র‍্যাগিং। এ বিষয়ে ধৃত সন্দীপ এবং তাঁর বডিগার্ড শেখ আফসার আলিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

    সিবিআই জানতে পেরেছে, প্রাথমিক ভাবে ঠিক ছিল, কোভিডের টাকায় আইসোলেশন রুমের পরিকাঠামোর উন্নতি করা হবে। সেখানে রোগীদের চিকিৎসার জন্য কেনা হবে মেডিক্যাল সরঞ্জাম। খাতায় কলমে তার উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে তা হয়নি।

    শুধু তাই নয়, হাসপাতালের এক কর্তার অফিসে অ্যান্টি চেম্বারও তৈরি করা হয়েছে ওই ফান্ড থেকে টাকা সরিয়ে। সেখানে সোফা ছাড়াও ডাইনিং টেবিল, এক্সিকিউটিভ চেয়ার কেনা হয়েছে। এসব কিছু কেনা হয়েছিল ভেন্ডর বিপ্লব সিংহ এবং সুমন হাজরার মাধ্যমে। এই বরাত পেতেও তাঁরা সন্দীপকে কমিশন দিয়েছিলেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
  • Link to this news (এই সময়)