কলকাতার ধাঁচে এ বার রাজ্যের সব পুরসভাতেই ইউনিট এরিয়া অ্যাসেসমেন্ট বা এলাকা-ভিত্তিক করবিন্যাস ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে রাজ্য। মাস ছয়েকের মধ্যেই এই ব্যবস্থা চালু করতে হবে। সম্প্রতি, এই মর্মেই রাজ্যের সব পুরসভাকে পুর দপ্তরের তরফে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে বলেই খবর। মূলত আয় বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ।পুর দপ্তরের এক কর্তা বলেন, ‘নয়া ব্যবস্থায় কর নেওয়া হলে যেমন আয় বাড়বে, তেমনই বেনিয়মও আটকানো যাবে।’ কারণ, পুরোনো হারে কর নেওয়াকে কেন্দ্র করে বেনিয়মের অভিযোগ অনেক দিনের। পুরকর থেকে পাওয়া টাকা এলাকার উন্নয়নের স্বার্থেই পুরসভাগুলিকে খরচ করার কথা জানিয়েছে পুর দপ্তর।
বর্তমানে রাজ্যের পুরসভাগুলিতে এআরভি বা অ্যানুয়াল রেটেবল ভ্যালু পদ্ধতিতে সম্পত্তিকর নির্ধারণ করা হয়। কী এই পদ্ধতি?
পুর দপ্তরের এক কর্তা জানান, কোনও সম্পত্তি থেকে যে বার্ষিক ভাড়া পাওয়া যায় বা বছরে যে ভাড়া পাওয়া যেতে পারে, তা থেকে ১০ শতাংশ মেরামতি খাতে ছাড় দিয়ে সম্পত্তির বার্ষিক মূল্য (এআরভি) নির্ধারণ করা হয়।
এর পর বার্ষিক মূল্যের ন্যূনতম ১১ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ হারে ধার্য হয় কর। ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে বার্ষিক মূল্যের যোগফলের উপর নির্ভর করে প্রতিটি ফ্ল্যাটের বার্ষিক করের হার ঠিক করা হয় এই পদ্ধতিতে। এই পদ্ধতি খুবই জটিল৷ এতে সম্পত্তিকর নির্ধারণে অনেক অনিয়ম ঘটত—এমনটাও অভিযোগ। সেই অনিয়ম ঠেকাতে বছর কয়েক আগে রাজ্যের মধ্যে কলকাতা পুরসভাতেই প্রথম ইউনিট এরিয়া অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতি চালু করা হয়।
এই ব্যবস্থায় কী সুবিধে?
পুর দপ্তরের বক্তব্য, এই ব্যবস্থায় করদাতা নিজেই সম্পত্তিকর নির্ধারণ করতে পারবেন। তা ছাড়া, এই পদ্ধতিতে যে এলাকার মানুষ যেমন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন, সেই অনুযায়ী কর বিন্যাস হবে। ফলে, অনেকের কর যেমন বাড়বে। তেমনই করের পরিমাণ কমবেও অনেক বাসিন্দার।
নয়া হারে কর চালুর জন্য পুর দপ্তরের নির্দেশ পেয়েই অনেক পুরসভা এলাকাভিত্তিক কর বিন্যাসের জন্য সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে। পুরকর্তারা জানাচ্ছেন, সম্পত্তিকর দেওয়ার পুরোনো পদ্ধতি থেকে নতুন পদ্ধতিতে নাম নথিভুক্ত করতে একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে। যা অনলাইনের পাশাপাশি পুরসভার অফিসেও করা যাবে।
শহরবাসীর সুবিধায় এলাকাভিত্তিক শিবির করার কথাও পুর দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে পুরসভাগুলিকে। এ প্রসঙ্গে এক পুরকর্তা জানান, করোনার সময়ে পুরসভার আয় তলানিতেও চলে গেলেও খরচ বেড়েছে অনেকটাই। সঞ্চিত অর্থও সে ভাবে নেই। তাই নয়া পদ্ধতিতে সম্পত্তিকর আদায় খুবই জরুরি। কারণ, পুরসভার আয়ের সিংহভাগই আসে পুরকর থেকে।