দপ্তর, কর্মী বাড়লেও ঘর বাড়েনি। একই অফিস রুমে ঠাসাঠাসি করে সবাইকে বসতে হয়। আবার নাগরিকরা বিভিন্ন পরিষেবা নিতে এসে বিভিন্ন বিল্ডিংয়ে ঘুরে বেড়ালেও তাঁদের অপেক্ষা করার মতো ব্লকে কোনও জায়গা নেই। এই অবস্থায় কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের কথা ভেবে রাজারহাট ব্লক প্রশাসন কার্যালয়ের পরিকাঠামো ঢেলে সাজানো হচ্ছে।কলকাতা নিউ টাউন লাগোয়া রাজারহাটের গ্রামীণ এলাকায় নাগরিক পরিষেবা দেয় রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতি। পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত এই পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন এলাকায় কম করে সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ থাকেন। কিন্তু তাঁদের সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিষ্ণুপুরে পঞ্চায়েত সমিতির অফিস বা বিডিওর অফিসে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই। এ বার সেই অফিস সাজতে চলেছে।
রাজারহাটের বিডিও গোলাম গওসল আজম বলেন, ‘একই দপ্তরের কর্মচারীরা ঘরের অভাবে বিভিন্ন ঘরে আলাদা আলাদা বসেন। তাতে কাজের অসুবিধা হয়। তাই দপ্তর অনুযায়ী বেশ কিছু ঘর নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। আবার সংস্কারও করা হচ্ছে। আশা করা যায় পুজোর আগেই সমস্ত কাজ সম্পূর্ণ হবে।’ রাজারহাট ব্লকের একদিকে কলকাতা বিমানবন্দর অন্যদিকে নিউ টাউন। পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত এই ব্লকের অন্তর্গত।
এর আগে দু’টি পঞ্চায়েত এলাকা ব্লক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিধাননগর কর্পোরেশনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আয়তনে ছোট হলেও জনসংখ্যা অনেক বেশি। কারণ, দিনের পর দিন এই এলাকায় একের পর এক আবাসন গজিয়ে উঠছে। প্রতিদিন কয়েকশো মানুষ ব্লক প্রশাসন কার্যলয়ে নাগরিক পরিষেবা নিতে এলেও তাঁদের বসার উপযুক্ত জায়গা থাকে না। তাই বিডিও অফিসের মূল বিল্ডিংয়ের নীচে একটি ওয়েটিং এরিয়া তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে মানুষ বসে বিশ্রাম নিতে পারবেন। আলো, পাখার পাশাপাশি মোবাইল চার্জ, পানীয় জল এবং শৌচালয়ের ব্যবস্থা থাকবে।
বিডিওর চেম্বার দোতলায়। অনেক প্রবীণ নাগরিক বিডিওর চেম্বারে আসেন। কিন্তু সিঁড়ি ভেঙে দোতলা পর্যন্ত তাঁরা উঠতে পারেন না। তাই বিডিওর চেম্বার নীচের তলে তৈরি হচ্ছে। ব্লক অফিসে যে মিটিং হল আছে, সেখানে এক সঙ্গে তিরিশ জনের বেশি মিটিং করতে পারেন না। অথচ এই ব্লক থেকে দু’টি বিধানসভার ভোট পরিচালনা হয়। ব্লকের কাজকর্ম, আইনশৃঙ্খলা পরিচালনার জন্য চারটি থানার সঙ্গে সমন্বয় রাখতে হয় পঞ্চায়েত সমিতির।
তাই ১৫০ আসন বিশিষ্ট শীততাপ নিয়ন্ত্রিত মিটিং কাম সেমিনার হল তৈরি হচ্ছে দোতলায়। এতদিন রাজারহাটে বিডিওর কোয়ার্টার বলে কিছু ছিল না। ব্লক অফিসের তিন তলায় টিনের শেড দেওয়া একটি ঘরকে রেস্টরুম হিসাবে ব্যবহার করেন বিডিওরা। নির্বাচন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারী-সহ একাধিক কারণে বিডিওদের রাতের পর রাত ব্লকে কাটাতে হয়। সেই অসুবিধা দূর করতে ব্লকের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ১২০০ বর্গ ফুটের অতিথি নিবাস তৈরি হচ্ছে। যেখানে বিডিও-সহ পঞ্চায়েত সমিতির অন্য কর্মকর্তারা প্রয়োজনে থাকতে পারবেন।
রাজারহাটে সবচেয়ে বেশি বিল্ডিং প্ল্যান পাশ হয়। ব্লু প্রিন্ট রাখার জন্য রেকর্ড রুম, নতুন কম্পিউটার রুম তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়া রিলিফ গোডাউন এবং অন্যান্য গোডাউন আলাদা করা হচ্ছে। রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর কর বলেন, ‘ঢেলে সাজা হচ্ছে পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন কার্যালয়। পুজোর আগেই আমূল বদলে যাবে রাজারহাট ব্লক।’