• রোগীদের খাবারে টান, সরকারি টাকা যাচ্ছে কোথায়?
    এই সময় | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে রোগীদের খাবারের পিছনে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ হয় সরকারের। কিন্তু রোগীরা কি আদৌ পরিমাণ মতো খাবার পান? ক্যাগের সমীক্ষা রিপোর্ট কিন্তু উল্টো কথা বলছে। কলকাতার অন্যতম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম সহ রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে রোগীরা ঠিকমতো খাবার পাচ্ছে কিনা, তার উপর সমীক্ষা চালিয়েছে ক্যাগ। তাতে দেখা যাচ্ছে, সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীদের যে পরিমাণ খাবার দেওয়া হচ্ছে সেটা মোটেও পর্যাপ্ত নয়।স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, সরকারি হাসপাতালে রোগীদের খাবার জোগাতে রাজ্য বাজেটে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হয় সেটা তাহলে যাচ্ছে কোথায়? অনেকেই আশঙ্কা করছেন, রোগীদের খাবারের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের একটা অংশ মাঝপথে গায়েব হয়ে যাচ্ছে। তার জন্যই রোগীদের খাবারে টান পড়ছে।

    ক্যাগের সার্ভে অনুযায়ী, হাসপাতালে ভর্তি থাকা প্রায় ৩৭.৫০ শতাংশ রোগী ডাক্তারদের তৈরি করে দেওয়া ডায়েট চার্ট অনুযায়ী খাবার পান না। ১১.৬৩ শতাংশ রোগী জানিয়েছেন, হাসপাতালের খাবার অতি নিম্নমানের এবং যে সময়ে খাবার দেওয়ার কথা তখন তা দেওয়া হয় না। স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকাারিকের কথায়, ‘হাসপাতালে যখন রোগীরা ভর্তি থাকেন তখন তাঁদের খাবারে অরুচি চলে আসে। তা সত্ত্বেও যে সংখ্যাটা পাওয়া যাচ্ছে সেটা খুবই উদ্বেগের।’

    ক্যাগের সমীক্ষাতেই উঠে এসেছে, হাসপাতালে রোগীদের খাবার দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে সেটা মানা হচ্ছে না। কলকাতার দু’টি প্রথম সারির সরকারি হাসপাতালে সমীক্ষা চালিয়ে ক্যাগের আধিকারিকরা জানতে পারেন, হাসপাতালের মধ্যে যেখানে রোগীদের খাবার তৈরি হচ্ছে সেই জায়গাগুলো মোটেও পরিষ্কার নয়। যে সব গুদাম ঘরে চাল, ডাল, কাঁচা আনাজ রাখা থাকে সেগুলোও অস্বাস্থ্যকর।

    রাজ্যের বহু নামকরা হাপাতালে রোগীদের খাবারের গুণগত মান যাচাইয়ের কোনও ব্যবস্থা নেই। রোগীদের পরিমাণ মতো খাবার দেওয়া হচ্ছে কিনা, সেটাও দেখা হয় না। বেশিরভাগ হাসপাতালে কোনও ডায়েটিশিয়ান নেই। বেশিরভাগ হাসপাতালে রোগীদের খাবার রান্না করার জন্য নিজস্ব কোনও লোক নেই। যারা রোগীদের খাবার রান্না করেন তাঁদের কোনও প্রশিক্ষণ নেওয়া নেই। সিংহভাগ হাসপাতালে খাবার নিয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য কোনও হেল্পডেস্ক কিংবা গ্রিভ্যান্স রিড্রেসাল সেল নেই।

    নবান্ন সূত্রের খবর, গত বছরের অক্টোবর মাসে প্রিন্সিপ্যাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেল (অডিট-১) সতীশ কুমার গর্গ রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের হাতে এই রিপোর্টের কপি তুলে দেন। বিষয়টি এতদিন গুরুত্ব না পেলেও আরজি করের ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ‘ক্যাগ যে সব বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে আমরা তার জবাব পাঠিয়ে দিয়েছি। যে সব জায়গায় খামতি রয়েছে সেগুলো আমরা ঠিক করে নিচ্ছি।’
  • Link to this news (এই সময়)