• পুজোয় 'We Want Justice' কীভাবে? জোরাল আন্দোলনের প্ল্যান
    আজ তক | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • দুর্গাপুজো হল বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব, যা সারা বিশ্বের নজর কাড়ে। কিন্তু এবারের পুজো শুধু আনন্দের জন্য নয়, প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবেও ব্যবহার হতে পারে। আরজি কর মেডিকেল কলেজে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার বিচার না হওয়ার ক্ষোভে উত্তাল শহরবাসী। অনেকেই ঠিক করেছেন, পুজোকে প্রতিবাদের অস্ত্র বানাবেন। পুজোর প্যান্ডেলগুলো এবার শুধুই উৎসবের স্থান না, বরং বিচার দাবি করার মঞ্চ হতে চলেছে।

    সূত্রের খবর, নানান পরিকল্পনা ও কৌশল নিয়ে শহরবাসী আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন দাবি তুলেছেন। তারা চাইছেন, পুজোর প্রতিটি পর্যায়ে এমনভাবে প্রতিবাদ করা হোক, যা সবার চোখে পড়ে এবং মিডিয়ার মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। কীভাবে পুজোর সময় প্রতিবাদ করা যায়, সেই পরিকল্পনাগুলি হচ্ছে—

    অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে প্রতিবাদ: আন্দোলনকারীদের মতে, পুজোর অষ্টমীতে দেবীর সামনে পুষ্পাঞ্জলির সময় সাধারণ মানুষ একসাথে জোরে "উই ওয়ান্ট জাস্টিস" বা "স্বৈরাচারী অসুরকে বধ করো মা" স্লোগান দিতে পারেন। এতে দেবী দুর্গার সামনে দাবি তুলে ধরার পাশাপাশি, সাম্প্রতিক অশান্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বার্তাও দেওয়া যাবে।

    ভিআইপি দর্শনের লাইনে বিচার দাবি: প্রতিবছর অনেক মানুষ ভিআইপি ঠাকুর দর্শনের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ান। এবার সেই দীর্ঘ সময়টিকে কাজে লাগিয়ে বিচার চাওয়ার স্লোগান তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে।

    বিভিন্ন মণ্ডপে ছোট দলে বিভক্ত হয়ে প্রতিবাদ: আন্দোলনকারীরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন জনপ্রিয় মণ্ডপে স্লোগান দিয়ে বিচার চাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। বিশেষত, যেসব মণ্ডপে মিডিয়া উপস্থিত থাকবে, সেগুলিকে টার্গেট করা হবে যাতে প্রতিবাদের বার্তা বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায়। উই ওয়ান্ট জাস্টিস লেখা টিশার্ট পড়ে ছোট ছোট দল মণ্ডপগুলিতে বিক্ষোভ দেখাতে পারে।

    ভিআইপি প্যান্ডেলে রাজনৈতিক নেতাদের সামনে বিক্ষোভ: বিভিন্ন ভিআইপি প্যান্ডেল, যেখানে বড় রাজনৈতিক নেতারা পুজো উদ্বোধন করতে আসবেন, সেগুলিকে বিক্ষোভের মঞ্চ বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এর জন্য ফুলপ্রুফ স্ট্র্যাটেজি তৈরি করা হবে যাতে কোনও হঠকারিতার ঘটনা না ঘটে।

    রাতদখল: পুজোর মধ্যেও যেকোনও একদিন রাতদখলের ডাক দেওয়া হতে পারে। পুজোর চারদিনের মধ্যে একদিন ফের আরজি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে রাতদখলের ডাক দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রে জানা যাচ্ছে। 

    আন্দোলনকারীদের এই পরিকল্পনা নিয়ে শহরের সাধারণ মানুষও উত্তেজিত। তারা চাইছেন, এবারের পুজো শুধু আনন্দের হবে না, এটা হবে এক প্রতিরোধের মঞ্চ। মানুষের ন্যায়বিচারের দাবিতে দেবী দুর্গার কাছে প্রার্থনা ও প্রতিবাদ একসঙ্গে চলবে। এই পরিকল্পনা শুধুমাত্র কলকাতার উৎসবমুখর পরিবেশে নতুন এক মাত্রা যোগ করবে না, বরং এটিকে একটি সামাজিক আন্দোলনের বড় অংশে পরিণত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। 

    এদিকে, ক্যালেন্ডারের নিয়ম মেনে এগিয়ে আসছে দুর্গাপুজো। যে ভাবে ১৪ অগস্ট রাতের পর থেকে গতি বেড়েছে আরজি কর আন্দোলনের, তাতে প্রশ্ন উঠছে, দিন কুড়ির মধ্যে কি সব ভুলে জাঁকজমকের পুজোয় মাততে পারবে কলকাতা? না কি দুর্গাপুজোর রাত মলিন হবে আন্দোলনের আঁচে? তবে এখনও পুজোর একমাস বাকি, ততদিন মানুষের মনের অবস্থা একই থাকবে নাকি বদলে যাবে? সময়ই এর উত্তর দেবে।


     
  • Link to this news (আজ তক)