• একটি ডিম কিনতে হত ১৬ টাকায়! ভারত থেকে গাড়ি বাংলাদেশে যেতেই অর্ধেক দামে ‘মধ্যবিত্তের প্রোটিন’
    আনন্দবাজার | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • বাংলাদেশে অন্তর্বর্তিকালীন সরকার গঠন হলেও স্থিতিশীল নয় সে দেশের বাজারদর। নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর সঙ্গে সঙ্গে অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে মুরগির ডিমের দাম। সাধারণ মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে ‘সস্তার প্রোটিন’। বাংলাদেশে একটি ডিম কিনতে হচ্ছিল ১৫-১৬ টাকায়। আড়তদারেরা বলছেন, প্রয়োজনের তুলনায় যোগান কম বলে এই অবস্থা। তবে ভারত থেকে পড়শি দেশে দু’লক্ষ ৩১ হাজার ৪০টি (১৩ হাজার ৯১০ কেজি) মুরগির ডিম রফতানি হতেই এক লাফে নামল সেই দাম। এখন বাংলাদেশের বাজারে একটি ডিমের দাম ৭-৮ টাকা।

    সোমবার বিকেলে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ডিমবোঝাই লরি বাংলাদেশে পৌঁছয়। তার পর খুশি বাংলাদেশের মুদিখানার মালিকরা। হাঁফ ছেড়েছেন সাধারণ মানুষ। ভারত থেকে বাংলাদেশে ডিমের গাড়ি পৌঁছনোর খবর নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশের রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘‘আমদানি করা ডিমের গুণগতমান পরীক্ষার পর সেগুলি মঙ্গলবারই বাজারজাত করা হয়েছে।’’ বাংলাদেশের শুল্ক দফতর সূত্রে খবর, আমদানি করা ডিমের দাম পড়েছে ১১ হাজার ২৭২ ডলার। হিসাব কষে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতিটি ডিমের দাম এখন মোটামুটি পাঁচ টাকা। প্রতি ডজন ডিমের নির্ধারিত মূল্যের উপর ৩৩ বহিঃশুল্ক বাবদ এক টাকা ৬৬ পয়সা যোগ করে এক একটি ডিমের দাম দাঁড়াচ্ছে সাত থেকে সাড়ে সাত টাকা মতো। রবিবারও বাংলাদেশে এক জোড়া মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ টাকায়। মঙ্গলবার সেটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ থেকে ১৫ টাকা জোড়া।

    বাংলাদেশের রাজধানী শহরে ‘হাইড্রো ল্যান্ড সলিউশন’ নামে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আছে। তারাই এ বার বাংলাদেশ থেকে ১৩ হাজার ৯১০ কেজি ডিম আমদানি করেছে। রফতানি হয়েছে ভারতের ‘শ্রী লক্ষ্মী এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে। আর বেনাপোল কাস্টমস্ হাউসে কাগজপত্র দাখিল করেছে সিএন্ডএফ এজেন্ট রাতুল এন্টারপ্রাইজ। তার মালিক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘‘ডিমের বাজারে অস্থিরতা দূর করার জন্য আরও বেশি ডিম আমদানি করতে হবে বাংলাদেশকে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি শুরুও হয়েছে। এই ভাবে ডিম আমদানি হলে বাংলাদেশের মানুষ আবার অল্পমূল্যে ডিম কিনতে পারবেন।’’ বেনাপোলের প্রাণীসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তা বিনয়কৃষ্ণ মণ্ডল জানান, সংশ্লিষ্ট আমদানিকারীদের কাগজপত্র পেয়েছেন। বেনাপোলে ডিমের গুণমান পরীক্ষার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। তবে ভারতীয় শংসাপত্রের উপর ভিত্তি করে ওই পণ্যের ‘ক্লিয়ারেন্স’ দেওয়া হচ্ছে।

    গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতা ভেঙে এ বার উৎসবের মরসুমে ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, সিদ্ধান্তের কারণ অভ্যন্তরীণ চাহিদা। সেই অভ্যন্তরীণ চাহিদার কথা মাথায় রেখেই ভারত থেকে তারা ডিম আমদানি করল। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার ওথেলো চৌধুরী আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘ডিম আমদানির উপর ৩৩ শতাংশ কাস্টমসে্‌র ভ্যাট রয়েছে। সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করে ডিমগুলো বাজারে পাঠানো হয়েছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)