বিহারের কুখ্যাত গ্যাংস্টার সুবোধ সিংহ এখন প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। জেলবন্দি অবস্থাতেই তাঁর গলব্লাডারে স্টোন ধরা পড়েছে। তাই এ বার জেলের অন্দরে তাঁর চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে বলে কারা দফতর সূত্রে খবর। গত শুক্রবার সুবোধকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছিল। সেখানেই তাঁর আইনজীবী কমলজিৎ সিংহ আদালতকে জানান, পেটের ব্যথায় ভুগছেন সুবোধ। তাঁর গলব্লাডারে স্টোন রয়েছে। তাই অবিলম্বে অস্ত্রোপচার করানো দরকার। দু’পক্ষের কথা শোনার পর ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতের বিচারক মণিকা চট্টোপাধ্যায় জেলেই তাঁর সব রকম চিকিৎসার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশের পরই আবারও সুবোধকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রেসিডেন্সি জেলে। আদালতের নির্দেশের কথা জানানো হয় কারা দফতরে। তার পর থেকেই জেলের ভিতর কী ভাবে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব, সে বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘আমরা আদালতের নির্দেশ পেয়েছি। আদালতের নির্দেশ মতোই জেলের ভিতরেই কী ভাবে সুবোধকে ভাল চিকিৎসা দেওয়া যায়, সেই বন্দোবস্ত করা হচ্ছে, কোনও ক্ষেত্রেই যাতে আদালতের নির্দেশের অবমাননা না হয়, সেই বিষয়টি আমরা মাথায় রাখছি।’’ প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসে প্রথম সপ্তাহে বিহার থেকে কলকাতায় আনা হয় গ্যাংস্টার সুবোধকে। বিহারের জেলে বসেই কলকাতায় একের পর এক ঘটনা ঘটিয়েছেন এই কুখ্যাত গ্যাংস্টার। বেউড় জেল থেকে এনে প্রথমে তাঁকে রাখা হয়েছিল আসানসোল জেলে। তৎকালীন কারামন্ত্রী অখিল গিরি আবার সুবোধের উপর জেলের অন্দরেই বিশেষ নজরদারির বন্দোবস্ত করেছিলেন। পরে আসানসোল জেল থেকে তাঁকে প্রেসিডেন্সি জেলে স্থানান্তরিত করা হয়।
কারা দফতর সূত্রে খবর, জেলেই তাঁর পেটব্যথা শুরু হয়। সেই পেটের ব্যথার রেশ ধরেই আদালতে তাঁর আইনজীবীরা গলব্লাডারে স্টোন ধরা পড়ার বিষয়টি জানান। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, সুবোধ-ঘনিষ্ঠরা চেয়েছিলেন, জেলের বাইরে এনে সুবোধের গলব্লাডারে স্টোনের অস্ত্রোপচার করা হোক। সেই পরিকল্পনামাফিক আদালতে তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু সুবোধের অতীত জীবনের কথা মাথায় রেখেই আদালত কারাবন্দি অবস্থাতেই তাঁর চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে বলেছে। এ বিষয়ে কারা দফতর আলোচনা চালাচ্ছে যে, কী ভাবে দ্রুত জেলেই সুবোধকে সুস্থ করে তোলা যায়। রাজ্য প্রশাসনের তরফে বলা হচ্ছে, সুবোধের মতো কুখ্যাত অপরাধীকে জেলের বাইরে যাওয়ার কোনও সুযোগ দেওয়া উচিত নয়। তাই আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে, সেই নির্দেশ মেনেই রাজ্য সরকার জেলের অন্দরেই তাঁর চিকিৎসা করাতে বদ্ধপরিকর।