সংবাদদাতা, বোলপুর: অবশেষে জামিন পেলেন অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল। দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে তাঁর এই জামিনে অনুব্রত মণ্ডলের পরিবারের পাশাপাশি খুশি বীরভূম জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জামিনের খবর জানাজানি হতেই খুশির হওয়া তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। গোরু পাচার মামলায় আর্থিক তছরুপে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল ইডির হাতে গ্রেপ্তার হন অনুব্রত-কন্যা। তারপর থেকে তিনি দিল্লির তিহার জেলে বন্দি আছেন। ১৭ মাস ১৫ দিন জেলে থাকার পর দিল্লি হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কর্মী বলেন, বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা ছিল। তাই সুকন্যা জামিন পেয়েছেন। দিন কয়েক আগে সিবিআইয়ের গোরু পাচার মামলায় কেষ্টদাও জামিন পেয়েছেন। এবার ইডির মামলায় দাদার কবে জামিন হয়, সেদিকেই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছি।
প্রসঙ্গত, গোরুপাচার মামলার তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে ২০২২ সালের ১১ আগস্ট বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। গোরু পাচার মামলার পাশাপাশি কোটি কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি নজরে আসে ইডির। এরপর আর্থিক তছরুপের অভিযোগে অপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির হাতে গ্রেপ্তার হন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। বর্তমানে তিনি তিহার জেলে বন্দি রয়েছেন। পরবর্তীতে তদন্তে অসহযোগিতা করার জন্য তাঁর অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারিকেও গ্রেপ্তার করে ইডি। এরপর সুকন্যার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা থাকার বিষয় সামনে আসতে তাঁকেও তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে ইডিকে জানিয়েছিলেন, গোরু পাচার মামলার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। এবিষয়ে যা বলার বাবা (অনুব্রত মণ্ডল) ও তাঁর অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারি বলতে পারবেন।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, গোরু পাচার মামলায় যে সকল ব্যক্তি লাভবান হয়েছিলেন, তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন অনুব্রত কন্যা। তাঁর নিজস্ব অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা জমা পড়েছিল। যেগুলি গোরু পাচারের টাকার উৎস বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানতে পারে। সেই টাকার উৎসের বিষয়ে কোনও সদুত্তর দিতে না পারায় ইডি তাঁকেও গ্রেপ্তার করে। তবে, এদিন সুকন্যার জামিনের খবরে আবির খেলা বা মিষ্টিমুখের ছবি দেখা না গেলেও খুশি সকলে।
বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি তথা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা ছিল। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ইডি ও সিবিআইকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়েকে গ্রেপ্তার করেছিল। তাদের সেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বিফলে যাবে, আমরা নিশ্চিত ছিলাম। সুকন্যার জামিনে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমরা আশাবাদী অনুব্রত মণ্ডলও খুব তাড়াতাড়ি জামিনে মুক্তি পাবেন।