• নিরিবিলি সমুদ্র সৈকতে লাল কাঁকড়ার মেলা, ঝাউবন  
    বর্তমান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাঁথি: দীঘা-মন্দারমণি-তাজপুরের কোলাহল এড়িয়ে যাঁরা নিরিবিলিতে বেড়ানো এবং থাকা-খাওয়ার আনন্দ উপভোগ করতে চান, তাঁদের জন্য এবার পুজোয় সেরা ঠিকানা হতে পারে রামনগরের দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর। হাতের নাগালে সমুদ্র আর সেখানে অবিরাম জলকল্লোলের শব্দ। মাঝখানে বিস্তীর্ণ ঝাউবন। সৈকতে সবসময়ই অজস্র লাল কাঁকড়ার লুকোচুরি লেগেই থাকে। একেবারে পাশ দিয়ে গিয়েছে কাঁথির শৌলা থেকে দীঘা ঝকঝকে মেরিনড্রাইভ রাস্তা। সেখানেই বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি রিসর্ট, হোটেল-লজ।  তার সঙ্গে গ্রামীণ এবং ঘরোয়া পরিবেশে হোম স্টে’তে রয়েছে থাকার সুযোগ। পুজোর ক’টা দিন থাকার জন্য এখানকার রিসর্ট, হোটেল-লজ কিংবা হোম-স্টে’গুলিতে বুকিং করতেও শুরু করেছেন পর্যটকরা।   

    মন্দারমণি থেকে উত্তরে মেরিনড্রাইভ রাস্তা ধরে এক কিলোমিটার ভিতরের দিকে এগিয়ে গেলে পড়বে দক্ষিণ পুরুষোত্তপুর এলাকা। কাঁথির দিক থেকে এলে শৌলা ব্রিজ পেরলেই দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর। এলাকাটি রামনগর-২ ব্লকের কালিন্দী গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে। সমুদ্রতীরবর্তী এই গ্রামটি ছবির মতো। সবুজ গাছগাছালি ও ঝাউবনে ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশ অনবদ্য। সমুদ্র থেকে সামান্য দূরেই গ্রামের বুক চিরে চলে গিয়েছে মেরিনড্রাইভ রাস্তা। আগে এই এলাকার রাস্তাঘাট ভালো ছিল না। দীঘা-শৌলা মেরিনড্রাইভ রাস্তা এবং যাত্রাপথে সংযোগকারী শৌলা, তাজপুর ও  শঙ্করপুরে তিনটি ব্রিজ চালু হওয়ার পর এই এলাকার চালচিত্র দ্রুত বদলাতে শুরু করে। নতুন রাস্তা আর তার সঙ্গে এলাকার পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে বেসরকারি উদ্যোগে এখানে একের পর এক রিসর্ট, হোটেল-লজ গড়ে উঠতে শুরু করে। মাত্র দু’বছরে এলাকার ছবি বদলে গিয়েছে। বর্তমানে নতুন করে আরও রিসর্ট গড়ার কাজও চলছে এলাকায়। এর আগে প্রশাসনিক সহায়তায় এলাকার হোম স্টে পরিকাঠামো গড়ার উদ্যোগ শুরু হয়। বর্তমানে এলাকার একাধিক বাড়িতে হোম স্টে পরিকাঠামো রয়েছে। স্বনির্ভর মহিলা গোষ্ঠীর তত্ত্বাবধানে সেই হোম স্টেগুলি পরিচালিত হয়। পর্যটকদের অনেকেই এই ধরনের শান্ত নির্জন-নিরিবিলি পরিবেশে বেড়ানো কিংবা থাকা-খাওয়া পছন্দ করেন। তাই তাঁরা হোম স্টে’র খোঁজ করেন। এর ফলে সেখানে পর্যটকদের ভিড়ও লেগে থাকে। এখানকার রিসর্ট, হোটেল-লজ, হোম স্টেগুলিকে নিয়ে একটি সংগঠনও গড়ে উঠেছে। যার নাম ‘মন্দারমণি কোস্টাল হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনের কর্মকর্তা রূপক গিরি বলেন, এখানে বেড়াতে এলে সামর্থ্যের মধ্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাপনা রয়েছে। সঙ্গে সমুদ্রতীরে বেড়ানো ও স্নানের মজাও রয়েছেই। রয়েছে বিচে লাল কাঁকড়া দর্শন ও মেরিনড্রাইভে লংড্রাইভ করার সুযোগ। দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুরে বেড়াতে এলে এককথায় খুবই ভালো লাগবে। পুজোর ক’টা দিন থাকার জন্য আমার রিসর্টে বুকিংও হয়ে গিয়েছে।  এলাকায় প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য বিমল গিরি বলেন, পুজোর সময় এখানকার হোম স্টে’গুলি বুকিং হয়ে যায়। দীঘা-মন্দারমণির কোলাহল এড়িয়ে পর্যটকদের অনেকে এই এলাকায় ভিড় করেন।  

    রামনগর-২ বিডিও অখিল মণ্ডল বলেন, এলাকায় বেসরকারি উদ্যোগে  রিসর্ট, হোটেল-লজ রয়েছে। রয়েছে হোম স্টেও। এলাকার পরিবেশও খুব সুন্দর। সেখানে পর্যটক-সহায়ক বেশকিছু পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। আগামী দিনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যা যা সহযোগিতা করার, তা নিশ্চয়ই করা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)