নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: আরামবাগ থানার পাশেই একটি ফ্ল্যাটবাড়ির নীচে মুদিখানার দোকানে দুঃসাহাসিক চুরি। দোকান থেকে নগদ লক্ষাধিক টাকা সহ দামি সিগারেটের কার্টন চুরি গিয়েছে বলে অভিযোগ। দোকানের মালিক রবীন্দ্রনাথ নন্দী থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে থানার নাকের ডগায় এরকম চুরির ঘটনায় পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। নিরাপত্তাহীনতায়ও ভুগছেন তাঁরা। মঙ্গলবার সকালের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় আরামবাগ শহরে।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগের গৌরহাটি মোড় থেকে থানায় যাওয়ার পথে রাস্তার ধারেই একটি ফ্ল্যাটবাড়ির নীচে ওই মুদির দোকান। ফ্ল্যাটের পাশে থাকা একটি দরজার উপরের গ্রিল কেটে দুষ্কৃতীরা ভেতরে ঢোকে। তারপর দোকানের ভেতরে থাকা চারটির মধ্যে তিনটি ক্যাশ বাক্স ভেঙে দেয়। অভিযোগ সেখান থেকে নগদ প্রায় এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা চুরি যায়। তারসঙ্গে দোকানে থাকা দামি কয়েক কার্টন সিগারেট নিয়েও চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। দোকানের মালিকপক্ষের তরফে মৃত্যুঞ্জয় নন্দী জানিয়েছেন, ফ্ল্যাটে নিজেদের পরিবারের সদস্যরাই থাকেন। নীচের তলায় রয়েছে দোকানটি। চারতলা ফ্ল্যাটের প্রথমতলায় তাঁর কাকু থাকেন। তার ওপরে তিনি এবং চারতলায় বাবা থাকেন।
গভীর রাতে দুষ্কৃতীরা গ্রিল কেটে ঢুকে প্রথমতলার ফ্ল্যাটের দরজার বাইরে একটি তালা লাগিয়ে দেয়। তার ওপরের তালাগুলিতে বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি আটকে দেয়। যাতে চুরিতে কোনও বাধা না পড়ে সেইজন্যই এই সতর্কতা বলে দাবি। পরিবারের সদস্য অন্নপূর্ণা নন্দী বলেন, অন্যান্য দিনের মতো এদিনও ভোর নাগাদ ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলতে গিয়ে দেখি বাইরে থেকে দরজায় তালা ঝুলছে। হঠাৎ তালা দেখে চমকে যাই। অন্য একটি নকল চাবি দিয়ে তালা খুলে বাইরে বের হই। বাকি উপরের ঘরগুলিতে বাইরে থেকে দরজায় ছিটকিনি দিয়ে দেওয়া হয়। সেগুলি খুলে দিই। পরিবারের বধূ গোপা নন্দী বলেন, থানার পাঁচিলের পাশেই আমাদের ফ্ল্যাট। তারপরও পরিকল্পনা করে এমন চুরিতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
মৃত্যুঞ্জয়বাবু আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে দুষ্কৃতীরা বিশেষ কোনও কেমিক্যাল ব্যবহার করেছে। সেই কেমিক্যাল গ্রিল কাটতে সাহায্য করেছে। কেমিক্যালটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। কোনও বড় বিপদ হতে পারতো। আমরা পুলিসকে সব কিছু জানিয়েছি। নগদ টাকা সহ প্রায় ১৫ বান্ডিল সিগারেট চুরি গিয়েছে। পুলিস তদন্তের স্বার্থে একাধিকবার এসেছে। আমরা চাই দ্রুত দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ুক। তারসঙ্গে খোয়া যাওয়া টাকা ও সামগ্রী উদ্ধার হোক। পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেমিক্যাল ব্যবহার হয়েছে কিনা তাও দেখা হচ্ছে।