• মণিপুরে নতুন করে অশান্তি, বরাত না পেয়ে মাথায় হাত হাজরাপাড়ার ঢাকিদের
    বর্তমান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • রবীন রায়, আলিপুরদুয়ার: মণিপুরের গণ্ডগোলে মাথায় হাত পড়েছে আলিপুরদুয়ারের পাটকাপাড়ার হাজরাপাড়ার ঢাকি মহল্লায়। পুজোর একমাসও বাকি নেই। ভিনরাজ্যের ওই গণ্ডগোলের জেরে এবার এখনও ইম্ফল, কোহিমা, ডিমাপুর বা তেজপুর থেকে দুর্গাপুজোর ঢাক বাজানোর বরাত আসেনি হাজরাপাড়ায়। দুশ্চিন্তা ও হতাশা গ্রাস করেছে আলিপুরদুয়ারের পরিচিত এই ঢাকি মহল্লায়। 

    প্রতিবছরই দুর্গাপুজোয় ঢাক বাজানোর জন্য ভিনরাজ্যের ওই এলাকাগুলি থেকে মোটা টাকার বরাত আসে পাটকাপাড়ার ঢাকিদের কাছে। পুজোর অন্তত দু’মাস আগেই বরাত আসে। এবার কিন্তু ছবিটা পাল্টে গিয়েছে। হাজরাপাড়ার ঢাকি পরিবারগুলির ধারণা, মণিপুরের ঘনঘন অশান্তির কারণেই এবার এমন পরিস্থিতি। ফলে আগমনীর আগেই যেন বিসর্জনের সুর। 

    আলিপুরদুয়ার জেলা শহর থেকে ২২ কিমি দূরে আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের বনচুকামারি গ্রাম পঞ্চায়েতে পাটকাপাড়া গ্রামটি। হাজরাপাড়ায় বঙ্গরত্নে ভূষিত প্রখ্যাত ঢোলবাদক বলরাম হাজরার হাত ধরে গড়ে উঠেছে ঢাকি মহল্লা। এখানে এখন ৩৫টি ঢাকি পরিবার। প্রতিটি পরিবারেই দারিদ্রের ছাপ প্রকট। পুজোর সময় বাদ দিয়ে বছরের বাকি সময়টা এঁরা কেউ টোটো চালান, কেউ দিনমজুরি করেন। বলরাম হাজরার হাত ধরে ঢাক বাজানো শিখেছেন শ্যামল হাজরা। 

    শ্যামল বলেন, প্রতিবছর দুর্গাপুজার সময় কোহিমা, ডিমাপুর বা তেজপুর থেকে উদ্যোক্তারা এখানে আসেন। ঢাক বাজানোর বরাত দিয়ে যান। কিন্তু, এবার এখনও কেউ এলেন না। মনে হচ্ছে, মণিপুরের দীর্ঘমেয়াদী গণ্ডগোলের জেরে তাঁরা আসছেন না। মণিপুর সহ আশপাশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এবার হয়তো আর কেউ বরাত দিতে আসবেন না। শেষ মুহূর্তে বরাত এলেও মণিপুরে গণ্ডগোলের জেরে আদৌ সেখানে যাব কি না, এখনই বলতে পারছি না, জানান আরএক ঢাকি মধুসূদন হাজরা। 

    হাজরাপাড়ার ঢাকিরা প্রতিবছর উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির পুজো উদ্যোক্তাদের বরাত পাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকেন। সেইসব জায়গায় ঢাক বাজানোর জন্য ঢাক প্রতি ১৫-১৬ হাজার টাকা করে পান। যাতায়াতের জন্য আলাদা করে টাকা দেন পুজো উদ্যোক্তারা। একএকজনের অধীনে পাঁচ থেকে ছ’টি করে ঢাক যায়। ঢাক বাজানোর সেই টাকায় বছরের কয়েক মাস চলে।
  • Link to this news (বর্তমান)