• বিবিএ পাশ করেও দুর্গা প্রতিমা গড়েন শিলিগুড়ির দীপেশ পাল
    বর্তমান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: বিবিএ পাশ। দু’বার চাকরির পরীক্ষা দিয়েও সফল হননি। তাই বাবা-মা’র পেশাতেই হাল ধরেন শিলিগুড়ির দীপেশ পাল। তিনি নিত্যনতুন ভাবনায় গড়ছেন থিমের দুর্গা। সমতল থেকে পাহাড় তাঁর প্রতিমার কদর যথেষ্ট। তালিকায় রয়েছে একলাখি প্রতিমাও। এই শিল্পের মাধ্যমেই পাল্টে গিয়েছে তাঁর জীবন-যুদ্ধের ‘ব্যালেন্সশিট’। তাঁর কথায়, হিসাবশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করার পর চাকরি না পেলে আক্ষেপ নেই। বাবা-মা’র দেখানো পথে নেমে বহু হিসেব পাল্টে দিয়েছি। প্রতিমা গড়া থেকে ব্যবসা প্রতিটি ধাপেই সাফল্য পেয়েছি। ভালো লাগছে। 

    মহানন্দা নদীরপাড়ে কুমোরটুলিতে দীপেশদের স্টুডিও। সেখানেই দীপেশ প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত। তাঁর বয়স ২৬। মঙ্গলবার প্রতিমা গড়ার ফাঁকে দীপেশ বলেন, ২০১৩ সালে মাধ্যমিক পাশ করার পর কমার্স নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হই। ২০১৫ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করি। এরপর ব্যাচেলার অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিয়ে পড়ি। কলেজ থেকে একবার একটি সংস্থার নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিই। সফল হয়নি। ২০১৮ সালে বিবিএ পাশ করার পর আরএকবার চাকরির পরীক্ষায় বসি। সাফল্য আসেনি। এতে হতাশ হইনি। তাই বসে না থেকে প্রতিমা তৈরির কাজে নেমে পড়ি। স্কুলে পড়ার সময়ই বাবা-মা’র কাছ থেকে প্রতিমা গড়ার তালিম নিয়েছিলাম। সকলের আর্শীবাদে এই কাজে ভালো সাড়া পেয়েছি। 

    প্রসঙ্গত, শহরের বিশিষ্ট মৃৎশিল্পীদের মধ্যে দিলীপ পাল অন্যতম। তাঁর স্ত্রী অলোকাদেবী মৃৎশিল্পী। শিল্পী দম্পতির বাড়ি হায়দরপাড়ায়। তাঁদের একমাত্র ছেলে দীপেশ। পাল দম্পতি দুর্গা প্রতিমা তৈরির জন্য এখন সিকিমে রয়েছেন। সেখানেও স্টুডিও রয়েছে। এখন শিলিগুড়িতে দু’টি স্টুডিও সামলাচ্ছেন দীপেশ। তিনি বলেন, শৈশব থেকেই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। পড়াশোনা শেষ করার পর কলকাতায় বিভিন্ন শিল্পীর স্টুডিওতে গিয়ে আধুনিক কিছু কাজ শিখেছি। সেই দৌলতেই এবার ২৮টি দুর্গা প্রতিমা গড়ছি। যারমধ্যে ১২টিই থিমের। ছবি দেখে সেগুলি বানাচ্ছি। কোনওটি কেবলমাত্র মাটির, আবার কোনওটি মাটির পাশাপাশি শোলা দিয়ে হচ্ছে। ন’জন কারিগরের সহযোগিতায় এই কাজ করছি। শহরের পাশাপাশি খড়িবাডি, জলপাইগুড়ি, সিকিমে প্রতিমা যাচ্ছে। যারমধ্যে একটি প্রতিমার দাম ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।
  • Link to this news (বর্তমান)