• জলপাইগুড়ি সদর প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ছাত্রী ১৩০৬, নজির রাজ্যে
    বর্তমান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: শহরের আর পাঁচটা সরকারি প্রাথমিক স্কুলে যখন দিন দিন পড়ুয়া কমছে, তখন ব্যতিক্রম জলপাইগুড়ি সদর প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়। বর্তমানে এই স্কুলে ছাত্রী ১৩০৬। যা উত্তরবঙ্গ তো বটেই, গোটা রাজ্যে নজির। এমনটাই দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের। 

    জলপাইগুড়ি জেলায় এমন বহু স্কুল রয়েছে, যাদের প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সব মিলিয়ে যা পড়ুয়ার সংখ্যা, সদর প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ে একটি ক্লাসেই পড়ুয়া তার চেয়ে অনেক বেশি। বেশিরভাগ সরকারি প্রাথমিকে যেখানে অধিকাংশ বেঞ্চ পড়ুয়ার অভাবে ফাঁকা থাকে, সেখানে এই স্কুলে ১৬টি শ্রেণিকক্ষেও কুলোচ্ছে না। শিক্ষক ৩৫ জন। একটি ঘরে ৭০ জনেরও বেশি ছাত্রীকে নিয়ে চলছে ক্লাস। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে আবার জুড়ছে পঞ্চম শ্রেণি। ফলে তখন কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। 

    জলপাইগুড়ি সুনীতিবালা সদর গার্লস হাইস্কুলের ক্যাম্পাসেই সকালে ক্লাস হয় সদর প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের। ওই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে আরও দু’টি শ্রেণিকক্ষের আর্জি জানিয়েছেন সদর প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরূপ দে। 

    বেশিরভাগ সরকারি প্রাথমিকে যখন পড়ুয়া কমছে, পড়ুয়ারা বেসরকারি স্কুলে চলে যাচ্ছে, সেখানে এই স্কুলের ইউএসপি কী? প্রধান শিক্ষকের দাবি, আমাদের স্কুলে পড়াশোনার সঙ্গে বছরভর নানা কর্মকাণ্ড থাকে। স্কুলকে প্লাস্টিকমুক্ত করেছি। স্কুলে শিশু সংসদ রয়েছে। তাতে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী। কোনও ছাত্রী প্লাস্টিকে টিফিন আনছে কি না দেখার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর। মিড ডে মিল দেখভালের দায়িত্ব খাদ্যমন্ত্রীর। প্রত্যেক ছাত্রীকে বছরে দু’টি করে গাছ দত্তক দেওয়া হয়েছে। তারা বাড়িতে ওই গাছ লাগিয়ে পরিচর্যা করছে। বছর শেষে যার গাছ সবচেয়ে সুন্দর হবে, তাকে পুরস্কৃত করা হবে। ছুটির দিনে অনলাইন ক্লাস, রিডিং ফেস্টিভাল, পড়ুয়াদের গ্রুপ ভাগ করে নাচ-গান, ক্যুইজের প্রতিযোগিতা চলছে। এবার সপ্তাহে একদিন ‘ব্যাগ ফ্রি’ ক্লাস করাতে চাইছি। ওইদিন পড়ুয়ারা স্কুলে বই নিয়ে আসবে না। 

    জলপাইগুড়ি সদর প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নিজস্ব থিম সঙ রয়েছে। মিড ডে মিলে স্বাদ বদল করতে সপ্তাহে একদিন পনির, মাঝেমধ্যে মুরগির মাংস রাখা হয়। প্রত্যেক পড়ুয়ার পুষ্টি নিশ্চিত করতে ক্লাসেই দেওয়া হয় ডিম। স্কুলের শিক্ষিকা মুনমুন সিংহ, সঙ্গীতা রায় সান্যাল বলেন, আসি যাই মাইনে পাই, এই মানসিকতার বাইরে বেরিয়ে শিশুদের পাঠ দেওয়ার চেষ্টা করছি। লটারির মাধ্যমে আমাদের স্কুলে ভর্তি হয়। প্রতিবছর পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এত পড়ুয়ার জায়গা দিতে একটু সমস্যা হলেও আমরা খুশি।
  • Link to this news (বর্তমান)