• কমতে শুরু করেছে জমা জল, বাঁধ কেটে ফেলার ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ই বাঁচাল ভূতনিকে
    বর্তমান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: উত্তর চণ্ডীপুরের বাসিন্দাদের ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ই বাঁচাল ভূতনিকে। দক্ষিণ চণ্ডীপুরে বাঁধ কাটার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলে বিবেচিত হল। জল কমতে শুরু করেছে। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে চলেছে ভূতনি। হাতেগোনা কয়েকটি গ্রাম জলমগ্ন থাকলেও অধিকাংশ গ্রাম থেকে জল নেমে গিয়েছে। বাঁধ ও সরকারি ত্রাণ শিবিরে আশ্রিতরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। অবশেষে ভূতনিবাসীর  এক মাসের জলবন্দি দশা কাটল। 

    ১০ আগস্ট গভীর রাতে ভূতনির উত্তর চণ্ডীপুরের কেশরপুরে বাঁধ ভেঙে জল ঢুকতে শুরু করে। প্রথমেই প্লাবিত হয় চণ্ডীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। কয়েকদিনের মধ্যেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে দক্ষিণ চণ্ডীপুর ও হীরানন্দপুর। বাসিন্দারা বাড়ি ছেড়ে উঁচু বাঁধ, সরকারি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেন। জলমগ্ন দশা কাটাতে সেচদপ্তর চণ্ডীপুর বাঁধের স্লুইচ গেট খুললেও কোনও লাভ হয়নি। সেসময় উত্তর চণ্ডীপুরের বাসিন্দারা দাবি করেন দক্ষিণ চণ্ডীপুরে বাঁধ কেটে জল বের করতে হবে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন দক্ষিণ চণ্ডীপুরের বাসিন্দারা। তবে সমস্ত বাধাকে উপেক্ষা করে ১ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে উত্তর চণ্ডীপুরের বাসিন্দারা আর্থমুভার দিয়ে জোরপূর্বক বাঁধ কেটে দেয়। এতে দক্ষিণ চণ্ডীপুর ও হীরানন্দপুরের সড়কপথে মানিকচক মথুরাপুরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এতে সংশ্লিষ্ট বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বাঁধ কাটার সিদ্ধান্ত একেবারে ভুল বলে তাঁরা দাবি করেন। তবে এই সিদ্ধান্তই বাঁচাল ভূতনিকে। বাঁধের কাটা অংশ দিয়ে প্রচণ্ড বেগে জল বেরিয়ে ফুলহর নদীতে পড়ছে। উত্তর চণ্ডীপুরের সামিরুদ্দিনটোলা, পূর্বপাড়া, গিরিটোলা, পুলিনটোলা, সাহেব রামটোলার কিছু এলাকা এখনও জলমগ্ন থাকলেও ভূতনির বেশিরভাগ এলাকা থেকে জল নেমে গিয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পুরো এলাকা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে বলে আশাবাদী ভূতনিবাসী। 

    উত্তর চণ্ডীপুরের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ চণ্ডীপুরে বাঁধ না কাটা হলে জমা জল ভূতনি থেকে বের হতো না। ১৯৯১, ১৯৯৮ সালের বন্যা পরিস্থিতিতে ঠিক এই সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এবার আমরা এই সিদ্ধান্তে পিছপা হলেও, কিছু মানুষের বাঁধ কাটার সিদ্ধান্ত আমাদের ভুতনিবাসীকে বাঁচাল।  জল নেমেছে অনেকটাই। দক্ষিণ চণ্ডীপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)