• কোর্টেই ৪০ মিনিট ঘেরাও সন্দীপ, প্রাক্তন অধ্যক্ষকে চড়, উড়ে এল জুতো
    বর্তমান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত সন্দীপ ঘোষকে আর হেফাজতে নিতে চাইল না সিবিআই। তিন শাগরেদ সহ প্রাক্তন অধ্যক্ষকে মঙ্গলবার হাজির করা হয় আলিপুর আদালতে। আর তার জেরে দিনভর কোর্টে চলল ধুন্ধুমার কাণ্ড। এজলাসেই ৪০ মিনিট ঘেরাও করে রাখা হয় সন্দীপবাবুকে। পরে চারজনকে বাইরে বের করামাত্র শুরু হয় ধস্তাধস্তি। প্রাক্তন অধ্যক্ষকে মারা হয় চড়। প্রিজন ভ্যানে তোলার আগেই তাঁকে লক্ষ্য করে উড়ে আসে জুতো। বিচারের দাবিতে স্লোগান ওঠে। এসবের আগেই অবশ্য সন্দীপ ঘোষ সহ চারজনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত।

    এদিন মামলার সওয়াল শেষে, রায়দানের আগেই এজলাসের মধ্যে সন্দীপবাবুকে লক্ষ্য করে ‘চোর’ ’চোর’ বলে চিৎকার করতে থাকেন কিছু কৌঁসুলি। তাঁর ফাঁসির দাবিতে স্লোগান ওঠে। বিপদ বুঝে এজলাসের ভিতরে ধৃতদের ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেন কেন্দ্রীয় জওয়ানরা। তা দেখেই বেরিয়ে যান আইনজীবীরা। বাইরে লবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ। আইনজীবীরা সাফ জানান, অভিযুক্তদের কিছুতেই বের হতে দেব না। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে সেই পর্ব চলার পর শেষপর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হন বিচারক। তারপরই কড়া প্রহরায় চারজনকে কোর্ট থেকে বের করা হয়। কিন্তু তারপরেই লবিতে শুরু হয়ে যায় চরম ধস্তাধস্তি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কার্যত দৌড়ে পুলিসি বেষ্টনীর মধ্যে ঢুকে পড়েন সন্দীপবাবু। পিছনে ধাওয়া করতে থাকেন আইনজীবীরা। শেষে বিশাল পুলিস বাহিনী অভিযুক্তদের একপ্রকার ঘিরে ধরে প্রিজন ভ্যানে তোলে। তারই মধ্যে ভিড়ের ভেতর থেকে সন্দীপ ঘোষকে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়া হয়। যদিও তা গিয়ে লাগে প্রিজন ভ্যানে গায়ে।

    এমনকী কয়েকজন প্রিজন ভ্যানের কাছে গিয়ে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও করে। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চারদিক থেকে স্লোগান ওঠে, ‘সন্দীপ ঘোষ চোর, চোর’, ‘বউকে পেটে লাথি মারার নায়ক সন্দীপ ঘোষ দূর হটো’। কেউ কেউ আবার পুলিসকে লক্ষ্য করে বলতে থাকেন, ‘সন্দীপকে আমাদের হাতে তুলে দিন, আমরা ভালো করে পালিশ করে দিই।’ কোর্ট চত্বরে জমায়েত হওয়া লোকজনকে বারবার সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন পুলিস কর্মীরা। কিন্তু তাতে কাজের কাজ হয়নি। এদিন কিছু মহিলাও কোর্ট চত্বরে চিৎকার করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কটূ মন্তব্য ছুড়ে দেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাড়ানো হয় পুলিস ফোর্স। শেষপর্যন্ত নিরাপদেই কোর্ট চত্বর ছেড়ে জেলের উদ্দেশে রওনা দেয় প্রিজন ভ্যান। তখনও আদালত চত্বরে বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন কয়েকশো আইনজীবী ও সাধারণ মানুষ।
  • Link to this news (বর্তমান)