•  আন্দোলন-মিছিলে পুজোর মুখে মাথায় হাত, শিকেয় ব্যবসা, পথে নামছেন হকাররা
    বর্তমান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পুজোর আর একমাসও বাকি নেই। শহরের রাজপথ জুড়ে বসে গিয়েছে অস্থায়ী বিজ্ঞাপন লাগানোর বাঁশের কাঠামো। লোকজন পথে ভিড়ও করছেন। কিন্তু কেনাকাটির জন্য নয়। সকলে ব্যস্ত আন্দোলনে। মাথায় হাত পড়েছে গড়িয়াহাট-হাতিবাগানের ব্যবসায়ীদের। তাঁদের অভিযোগ, শনি-রবি এলেই শুরু হয়ে যায় আন্দোলন। তাও আবার মিটিং-মিছিল হয় সন্ধ্যায়। আর এতেই ভয়ে লোকজন বাজারমুখো হচ্ছে না। মূলত চৈত্রমাস আর পুজো, এই দু’টো সময়ে ব্যবসায়ীরা রোজগারের আশা করেন। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এবার আর উপায় না দেখে, কেউ বলছেন, হাত জোড় করে পথে নামব আমরা। আবার কেউ বলছেন, হকারদের জন্য জাস্টিস চেয়ে মিছিলে এবার আমাদেরকেই নামতেই হবে।

    পুজোর ফ্যাশনে নাকি এবার ‘জস্টিস’ লেখা টি-শার্ট চাইছেন আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার গড়িয়াহাটে এক তরুণ সেই টি-শার্ট খুঁজতেই গড়িয়াহাটে এসেছিলেন। এক বিক্রেতাকে গিয়ে তিনি বললেন, ‘দাদা, জাস্টিস লেখা টি-শার্ট হবে?’ উত্তর এলো, ‘না ভাই। আপনি খুঁজে পেলে দিয়ে যাবেন। ওই টি-শার্ট পরে এবার আমাদেরকেই নামতে হবে।’ গড়িয়াহাট ইন্দিরা হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ ঘোষ বলছিলেন, ‘মনে রাখতে হবে, হকাররা কিন্তু অসংগঠিত শ্রমিক। তাই ব্যাঙ্ক ঋণ পান না অনেকেই। ব্যক্তিগত পরিসরে চড়া সুদে তাঁরা ঋণ নেন। সেই টাকা নিয়েই মাল তোলেন তাঁরা। কারওর তো সারাদিনে বউনিই হচ্ছে না।’ তাঁর অভিযোগ, ‘সাধারণ মানুষদের কাছে আমাদের আবেদন, আমাদের কথাও ভাবুন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সন্ধ্যা হলেই মিছিলে নামছেন অনেক রাজনৈতিক দল। কখনও বিজেপির লোকেরাই নামছেন, পতাকা ছাড়া। আমরা নেতৃত্বর সঙ্গে আলোচনা করছি, জাস্টিস চেয়ে এবার আমরা মিছিলে নামব।’ এদিন গড়িয়াহাটের এক বস্ত্রব্যবসায়ী বিমল বলছিলেন, ‘কোনও বাজার নেই। আগামী দিনে কী হবে বুঝতে পারছি না।’ মানুষ ভরসা নিয়ে আসতেও পারছেন না। অটোগুলো ঘুরে আসছে বলে বেশি ভাড়া চাইছে। সাধারণ মানুষ ভাবছেন, ফিরতে গিয়েই কালঘাম ছুটবে। তাই অনেকেই অনলাইন শপিংয়ে পা বাড়াচ্ছেন। 

    এই বিষয়ে হকার সংগ্রাম কমিটি সাধারণ সম্পাদক শক্তিমান ঘোষ বলছিলেন, ‘একটা গুরুত্বপূর্ণ রবিবার চলে গেল। হাতিবাগান-গড়িয়াহাটের ব্যবসায়ীরা রীতিমতো কান্নাকাটি করছেন। পুজোর সময় অনেকে অস্থায়ী কর্মী রাখেন। তাঁদের পারিশ্রমিক দিতে পারেননি অনেকে। আন্দোলন চলুক। আমরা সকলেই আর জি করের বিচারের চাই। গরিব-খেটে খাওয়া মানুষরা শোচনীয় অবস্থায় পড়ছেন। আমরা বলছি, রাত দখল করুন। কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু দয়া করে সকালে-বিকেলে মিছিল করে খেটে খাওয়া মানুষের পেটে লাথি মারবেন না। আমরা সাধারণ মানুষের কাছে হাতজোড় করে দাঁড়াব। আমরা তো মরে যাচ্ছি। গোটা কলকাতায় বিভিন্ন এলাকায় হকাররাও দাঁড়াবেন।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)