• মনমরা জলহস্তি, ওড়িশা থেকে আলিপুরে দুই সঙ্গী
    বর্তমান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পর্যাপ্ত খাওয়া-দাওয়া নেই। জলকেলিও প্রায় ছেড়ে দিয়েছে। থেকে থেকে ঢুকে যাচ্ছে নিজের কুঠুরিতে। বসে থাকছে জলহস্তিটি। কয়েক মাস ধরেই এমন মনোভাব আলিপুর চিড়িয়াখানার এই বিশাল প্রাণীটির। 

    চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের ধারণা, একা হয়ে পড়েছে জলের হস্তি বলে পরিচিত প্রকাণ্ড এই প্রাণীটি। তার একাকিত্ব কাটাতে শেষ দু’মাস ধরে সঙ্গী খুঁজছিল পশুশালা কর্তৃপক্ষ। অবশেষে প্রাণীটির সঙ্গীর সন্ধান মিলল। ওড়িশার নন্দনকানন থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হল দু’টি জলহস্তিকে। সোমবার গভীর রাতে সড়কপথে নিয়ে আসা হয়েছে তাদের। এ নিয়ে গত একমাসের মধ্যে ওড়িশার চিড়িয়াখানা থেকে দু’বার আলিপুর পশুশালায় অতিথি নিয়ে আসা হল।

    জলহস্তিটির মানসিক স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই আরও দু’টি জলহস্তি নিয়ে আসার এই সিদ্ধান্ত। একইসঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ নিয়ে আসা হয়েছে দর্শকদের মনোরঞ্জনের জন্য। চিড়িয়াখানার অধিকর্তা শুভঙ্কর সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, জলাভূমিতে থাকা এক জোড়া সোয়াম্প হরিণ, চার শিং ওয়ালা হরিণ এবং পাঁচটি হগ হরিণ (দু’টি পুরুষ ও তিনটি মেয়ে) নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁদের জন্য নতুন করে পৃথক এনক্লোজার তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে কলকাতা থেকে ওড়িশার নন্দনকাননে পাঠানো হয়েছে একজোড়া জিরাফ, চারটি গ্রিন ইগুয়ানা এবং একটি মনিটর লিজার্ড। 

    আলিপুর চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে একটি মাত্র জলহস্তি পশুশালায় রয়েছে। প্রাণীটি মূলত জলীয় ফল ও ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ খায়। ইদানীং তার খাওয়া-দাওয়ার পরিমাণ কমে গিয়েছিল। কম খাওয়া-দাওয়ার জেরে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়েও পড়ছিল। এরপর পশু চিকিৎসরা চিড়িয়াখানার ওই জলহস্তির মেডিক্যাল পরীক্ষা করান। দেখা যায়, শারীরিকভাবে কোনও সমস্যা নেই তার। এরপর চিকিৎসকদের পরামর্শে তার সঙ্গী নিয়ে আসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় আলিপুর পশুশালা। সেই মতো আলিপুর জু অথরিটির কাছে বিষয়টি জানায়। দুই রাজ্যের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে পশু আদানপ্রদানের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। পশুশালার কর্তাদের দাবি, এবার একাকিত্ব কাটবে জলহস্তিটির। চনমনে হয়ে উঠবে। যা দর্শক টানতে আরও সাহায্য করবে বলে আশাবাদী পশুশালা। আজ, বুধবার থেকে পশুগুলিকে দর্শকদের সামনে নিয়ে আসা হবে। ওড়িশা থেকে আসা দু’টি জলহস্তি ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসকদের নজরদারিতে থাকবে। 

    উল্লেখ্য, এর আগে ২৮ আগস্ট প্রথম দফায় এক জোড়া সিংহ, একটি স্ত্রী বাঘ, এক জোড়া হিমালয়ান ভালুক আনা হয়। দু’জোড়া ইঁদুর হরিণ এক সপ্তাহ আগে আনা হয়েছিল। এপ্রিল মাসে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম জুলজিক্যাল গার্ডেন থেকে পশু বিনিময় কর্মসূচি অনুযায়ী নিয়ে আসা হয়েছিল একটি সাদা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, এক জোড়া রিং লেজযুক্ত লেমুর, ধূসর রঙের নেকড়ে, ডোরাকাটা হায়না, কালো রাজহাঁস এবং পাঁচটি বন্য কুকুর এবং তিনটি হগ হরিণ।
  • Link to this news (বর্তমান)