বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সারা রাত স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। রাতেই তাঁদের অবস্থান মঞ্চে এসেছিলেন আরজি করের নির্যাতিতা চিকিৎসকের মা, বাবা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা। 'আশা করি বিচার পাব', মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভের মঞ্চে ফের একবার বললেন নির্যাতিতার মা। জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশাপাশি অবস্থান বিক্ষোভে দেখা গিয়েছে সিনিয়র চিকিৎসকদেরও।বুধবার সকালেও স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ঠায় বসে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। তাঁদের পাশে দেখা গেল আমজনতাকে। আন্দোলনরত চিকিৎসকদের শুকনো খাবার, জল এগিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। রাত গড়িয়ে ভোর হলেও আন্দোলনকারীদের স্লোগানের জোর কমেনি। ভোরে তাঁরা স্লোগান তোলে, 'ভোর হলো, দোর খোল, দুয়ারে ডাক্তার এলো রে।'
কোন কোন দাবি নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান জুনিয়র চিকিৎসকদের?
প্রথমে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবি ছিল। পরে একটি অতিরিক্ত দাবি সংযোজিত হয়। তাঁদের দাবি, আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করা, কী কারণে অপরাধ, তা প্রকাশ করা। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা।
যে বা যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে প্রমাণ লোপাটের সঙ্গে যুক্ত তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ পদক্ষেপের দাবি উঠেছে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের ইস্তফাও চেয়েছেন আন্দোলকারীরা। এ ছাড়া রাজ্যের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিও উঠেছে। রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজগুলিতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখা ও রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার ইস্তফাও চেয়েছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা।
আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছিল, মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে কাজে যোগ দিলে কারও বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে না। রাজ্যের আইনজীবীও কপিল সিবালও আদালতে জানিয়েছিলেন, আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় যেতে রাজি বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরে একাধিক দাবিতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। দুপুর গড়িয়ে রাত পেরিয়ে সকাল হলেও আন্দোলনকারীরা নিজেদের অবস্থানে এখনও অনড়।