এই সময়, কালনা: রাজ্যের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রয়েছে। প্রতিবারই পুলিশের হাতে সে ধরা পড়ে কিন্তু, কোনও থানাই তাকে ধরে রাখতে পারে না। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যাওয়া যেন তার বাঁ হাত কি খেল। এ বারও সে পালিয়ে গেল কালনা আদালত থেকে। পলাতক ওই অভিযুক্ত এ বার বলতেই পারে, ‘ডন কো পাকড়না মুশকিল হি নেহি নামুমকিন হ্যায়।’সোমবার রাতে হুগলির বলাগড়ের ধারতিন্নয়ের বাসিন্দা বাসুদেব মণ্ডল নামে বছর ৩৪-এর ওই যুবককে গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার নিয়ে আসা হয় কালনা এসিজেএম আদালতে। সেখানে বিচারকের এজলাসে পুলিশ যখন বাসুদেবকে নিয়ে যাচ্ছিল তখনই সকলের চোখ এড়িয়ে পালিয়ে যায় ওই যুবক।
বিভিন্ন জায়গায় তন্নতন্ন করে খোঁজ চালালেও মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ সিং বলেন, ‘ফেরার ওই অভিযুক্তর খোঁজে তল্লাশি চলছে। এই ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তের পরে কারও গাফিলতি সামনে এলে শো-কজ করা হবে।’
বাসুদেবের বিরুদ্ধে রায়না, বর্ধমান, বলাগড়, শক্তিগড়, জামালপুর, পান্ডুয়া, নিউটাউন, বাগুইহাটি, কালনা থানায় সব মিলিয়ে ১৫টি মামলা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ৭টি মামলা রয়েছে বলাগড় থানায়। মাস দুই আগে বর্ধমানে নিয়ে আসার সময়ে উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়ে যায় বাসুদেব। তার পর থেকে সে ফেরার ছিল।
সোমবার রাতে কালনা থানার পুলিশ তাকে আগ্নেয়াস্ত্র সমেত গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে বিএনএস আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে। এ দিন দুপুর দুটোর আগে আদালতের পুলিশ লক-আপ থেকে এজলাসে নিয়ে যাওয়ার সময়ে সকলের নজর এড়িয়ে বাসুদেব বাইরে বেরিয়ে আসে। বাসুদেব যে চম্পট দিয়েছে তা টেরই পাননি পুলিশ কর্মীরা। বহু পরে বিষয়টি নজরে আসে। আদালতে হাজির অন্য অভিযুক্তরাই জানায়, ওই যুবক বেরিয়ে গিয়েছে।
এর পরই টনক নড়ে পুলিশের। অভিযুক্তর খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। এসডিপিও রাকেশ চৌধুরী নিজেও মোটরবাইক নিয়ে তল্লাশিতে বার হন। অন্য পুলিশকর্মীরাও ভাগ হয়ে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু করেন। তল্লাশি চালানো হয় হাসপাতাল, স্টেশন, ইটভাটা-সহ বিভিন্ন জায়গায়। পরে পুলিশ আদালত চত্বরের সামনের একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। তাতে দেখা গিয়েছে, সামনের রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলে যাচ্ছে বাসুদেব। পুলিশ বুঝতে পারে, আর কিছু করার নেই, পাখি ফুড়ুৎ।