নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন খোদ বিচারকরাই। একটি পকসো মামলায় রায় পছন্দ না হওয়ায় ডায়মন্ড হারবারে বিচারকদের আবাসনে ঢুকে হামলার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এক পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধেও দুষ্কৃতীদের মদত দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এই মর্মে অভিযোগ এনে ডায়মন্ড হারবার জেলা আদালতের তিন বিচারক দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা মুখ্য বিচারককে চিঠি দিয়েছিলেন। সেই চিঠি কলকাতা হাইকোর্টে পাঠিয়েছেন তিনি।ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে ডায়মন্ড হারবার পুলিশও। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীকে ক্লোজ করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে তাঁর থেকে জবাব তলব করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়। বিচারকদের লিখিত অভিযোগ, ষড়যন্ত্র করে দুষ্কৃতীরা বিচার ব্যবস্থাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। কয়েকদিন আগে পকসো মামলায় দেওয়া একটি রায় পছন্দ না হওয়ায় বিচারকদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে চিঠিতে।
অভিযোগ, গত ৮ সেপ্টেম্বর বিচারকদের আবাসনে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। এর জেরে বিচারকরা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও উল্লেখ রয়েছে এই চিঠিতে। মুখে কালো কাপড় দিয়ে আবাসনের আশাপাশে লোকজন ঘোরাঘুরি করছে বলে অভিযোগ। তার সত্যতা সিসিটিভি ফুটেজে রয়েছে বলে জানানো হয় চিঠিতে। ৮ সেপ্টেম্বরের এই ঘটনায় আতঙ্কিত বিচারকরা। গোটা ঘটনায় এক পুলিশ অফিসারের নাম উল্লেখ করে 'মদত' দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সাংবাদিক বৈঠক করে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ। পুলিশ সুপার রাহুল গোস্বামী স্পষ্ট বলেন, 'দোষীকে রেয়াত করা হবে না।' গোটা ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। রাহুল গোস্বামী জানান, জজ আবাসনে বাইরে ৮ তারিখ একজনকে মুখ ঢাকা অবস্থায় দেখা যায়।। ঘটনায় একজনকে আটক করে হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বাড়ানো হয়েছে জজ আবাসনের নিরাপত্তাও। আগে সেখানে ৪ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন ছিলেন। এখন সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ৬ জন করা হয়েছে। বিচারকদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত রকম পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপার বলেন, 'বিচারকদের নিরাপত্তার বিষয়টি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। ঘটনার সময় কারা কারা ডিউটিতে ছিলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।' নিরাপত্তার স্বার্থে জজ আবাসনে প্রবেশের ক্ষেত্রে ডিজিটাল রেজিস্টারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ম্যানুয়াল চেকিং ও মেটাল ডিটেক্টর বসানো হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।