এই সময়, বহরমপুর: ভিনরাজ্যে নয়, এ বার বিদেশে জাহাজডুবির ঘটনায় নিখোঁজ হলেন মুর্শিদাবাদের এক যুবক। পয়লা সেপ্টেম্বর কুয়েতের জলসীমায় ইরানের বাণিজ্যিক জাহাজ ‘আরব আখতার ১’ ডুবে যায়। ওই জাহাজে ইরানের ৩ জন ও ভারতের ৩ জন ক্রু ছিলেন। তিন ভারতীয়ের মধ্যে ২ জন চেন্নাইয়ের বাসিন্দা। একজন মুর্শিদাবাদের রানিতলার আমডহরা গ্রামের অভিজিৎ সরকার (২৮)।দুর্ঘটনার দু’দিন পরে ইরান এবং কুয়েতের যৌথ প্রচেষ্টায় ডুবে যাওয়া জাহাজের তিন জন ক্রুর দেহ উদ্ধারের পরে শনাক্ত করার জন্য অভিজিতের পরিবারের কাছে ডিএনএ-এর নমুনা চেয়ে পাঠানো হয়। তারপর থেকেই চরম উৎকণ্ঠায় পরিবার। ছেলে বেঁচে আছে না মারা গিয়েছে এখনও পরিষ্কার নয়। কলকাতায় যে এজেন্টের মাধ্যমে ছেলে ইরানে গিয়েছিল তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও দুর্ঘটনার কারণ জানতে পারেননি অরুণকুমার সরকার।
তিনি বলেন ‘আমাদের ২ সেপ্টেম্বর জাহাজডুবির খবর দেওয়া হয়। আমরা ভেবেছিলাম, কোনও না কোনও ভাবে নিশ্চয় ওরা ছেলেকে উদ্ধার করবে। কিন্তু পরে জেনেছি, তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আমার ছেলে রয়েছে কিনা জানতে ওরা চার দিন আগে ডিএনএ-র নমুনার জন্য ডেকে পাঠায়। কলকাতায় ওই সংস্থার অফিসে গিয়ে আমি রক্তের নমুনা দিয়ে এসেছি। ওরা রিপোর্ট পাঠিয়েও দিয়েছে। উদ্ধার হওয়া তিন জেনের মধ্যে আমার ছেলের দেহ আছে কিনা, তিন দিন পরে রিপোর্ট দেবে বলেছে। খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’
২৭ মে মুর্শিদাবাদের রানিতলার বাড়ি থেকে ইরানে জাহাজের কাজে গিয়েছিলেন অভিজিৎ। জাহাজডুবির দু’দিন আগে পরিবারের সঙ্গে তাঁর শেষ কথা হয়। তারপর আর যোগাযোগ হয়নি। পরিবারে বাবা-মা, স্ত্রী ও ৫ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। নিখোঁজ অভিজিতের মা জয়ন্তী বলেন, ‘ওদের জাহাজ ইরান থেকে ছাড়ার পরে ছেলে শেষ মেসেজ করেছিল। লিখেছিল, তোমরা সবাই ভালো থেকো। সেটাই যে ছেলের শেষ মেসেজ হবে ভাবতে পারিনি।’
স্ত্রী চিঙ্কি বলেন, ‘২৯ অগস্ট শেষ আমার সঙ্গে কথা হয়েছিল। বলেছিল, জাহাজ ছেড়ে দিয়েছে। সমুদ্রে থাকার সময়ে আর ফোন করতে পারবে না। ওদের কলকাতার অফিস থেকে ফোনে দুর্ঘটনার খবর জানায়। স্বামী কেমন আছেন, আদৌ বেঁচে আছে কিনা, কিছুই বুঝতে পারছি না।’
সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ ইরানের বন্দর ও সামুদ্রিক নৌচলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধান নাসের পাসানদেহ-এর বক্তব্য উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, তিন জনের দেহ উদ্ধার হলেও নিখোঁজ তিন ক্রু সদস্যদের সন্ধানে সমুদ্রে তল্লাশি চলছে।