বাবুল হক, মালদহ: হবিবপুর ধর্ষণ-কাণ্ডে মাত্র দশ দিনেই আদালতে চার্জশিট পেশ করল মালদহ জেলা পুলিশ। পকসো আইনে মামলা রুজু করে ঘটনার পরের দিনই নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ‘হাতুড়ে’ চিকিৎসককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। ঘটনার মাত্র দশ দিনের মধ্যেই তদন্ত শেষ করে পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে। বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এই বিষয়টি জানিয়েছেন মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সম্ভব জৈন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাক্তারি শেখানোর অছিলায় নবম শ্রেণির এক আদিবাসী ছাত্রীকে ধর্ষণ করে গ্রামের এক ‘হাতুড়ে’ চিকিৎসক বলে অভিযোগ ওঠে। ওইদিন অভিযুক্ত হাতুড়ে ডাক্তারকে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। অভিযুক্তকে গাছে বেঁধে রাখা হয়। ঘটনা ঘিরে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় মালদহের হবিবপুর থানা এলাকার এক আদিবাসী গ্রামে। খবর পেয়ে সেদিন ওই গ্রামে ছুটে যায় হবিবপুর থানার পুলিশ। সুবোধ মণ্ডল (৫৪) নামে অভিযুক্ত ওই ‘কোয়াক ডাক্তার’কে জনরোষের কবল থেকে উদ্ধার করে তাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নির্যাতিত নাবালিকাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এই ঘটনায় জেলার রাজনৈতিক মহলেও তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
দফায় দফায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান আদিবাসীরা। মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কে ব্যারিকেড বেঁধে পর পর দু’দিন পথ অবরোধ চলে। ধর্ষণের ঘটনায় দোষীর কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির দাবিতে সুর চড়ান আদিবাসীদের পাশাপাশি বিজেপিও। পৃথকভাবে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান হবিবপুরের বিজেপি বিধায়ক জোয়েল মুর্মুও। ধর্ষণের ঘটনায় ধৃত হাতুড়ে ডাক্তারের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার হন তিনি। নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়ান রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে হবিবপুর গিয়েছিলেন রাজ্যসভার সংসদ সামিরুল ইসলাম। মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও যান। মন্ত্রীরা নির্যাতিত নাবালিকার বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তাঁদের পাশে সব সময় থাকার আশ্বাস দেন। ধর্ষণের অভিযোগে ধৃতের চরম শাস্তির দাবি ওঠে।
এদিন মালদহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সম্ভব জৈন জানান, নির্যাতিতা ও ধৃতের ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ডিএনএ মিলে গিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত নমুনাগুলির ফরেনসিক পরীক্ষা হয়েছে। এই পকসো মামলায় সাতজনকে সাক্ষী করা হয়েছে। পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে কাজ করেছে। নদিনেই তদন্ত শেষ করা হয়। দশদিনে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।