মহিষাসুরমর্দিনী নয়, মা পূজিত ‘অভয়া’ রূপে, মহালয়া থেকেই শুরু হুগলির শীল ঠাকুরবাটীর পুজো
প্রতিদিন | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সুমন করাতি, হুগলি: দশভূজা,মহিষাসুরমর্দিনী। মা দুর্গার এই রূপই পরিচিত। তবে হুগলির শীলবাড়ির দুর্গাপুজোয় (Bonedi Barir Durga Puja) মায়ের দশ হাত নেই। অসুর নেই। সঙ্গে রয়েছেন স্বয়ং শিব। রয়েছেন চার পুত্র-কন্যা। মা পূজিত অভয়া রূপে। দেবী পরিচিত শিব পার্বতী বা হরো পার্বতী নামে।
চুঁচুড়া ঘুটিয়াবাজার এলাকায় প্রায় তিনশো বছরের বাস শীল পরিবারের। তবে পুজোর বয়স আইড়শো। পূর্ব পুরুষ গোকুল কৃষ্ণের স্ত্রী রানীকুঞ্জবালা দেবী বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেন। প্রথম থেকেই মায়ের রূপ অভয়া। উলটো রথের দিন কাঠামো পুজোর মাধ্যমে পুজোর ঢাকের কাঠি পড়ে। সেই দিন থেকে প্রতিমা তৈরি কাজ শুরু হয়। ধীরে ধীরে মহালয়া দিন আসলেই
পুজো শুরু এই বনেদি বাড়িতে।
মহালয়া অমাবস্যা তিথির পর দিনই প্রতিপদেই শীলবাড়িতে মায়ের ঘট স্থাপন হয়। পুজো-অর্চনা শুরু হয় প্রতিপদ তিথি থেকেই। ষষ্ঠীর দিন নিয়ম মেনেই সম্পূর্ণ হয় মায়ের বোধন। এই বাড়িতে বলি প্রথা নেই। অষ্টমী ও সন্ধিপুজোয় ধুনোপড়োনোর রীতি রয়েছে।
বলিপ্রথা না থাকলেও সন্ধিপূজো মাষভক্ত বলির প্রথা আছে এই বাড়ি পূজাতে। অষ্টমী পূজা এবং সন্ধি পূজাতে ধুনাপড়ানোর রীতি প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। শীলঠাকুর বাড়িতে মাকে অন্ন ভোগ দেওয়া হয়না। গোটা ভোগের সঙ্গে ফল এবং মিষ্টান্ন দিয়ে মাকে ভোগ নিবেদন করা হয়। এছাড়াও সার বছর এই বাড়িতে লক্ষীনারায়ণের পুজো করা হয়।
বাড়ির প্রবীণ সদস্য বিশ্বথান শীল বলেন, “প্রথমে এই বাড়িতে পুজো হত না। পাশেই গুণময় শীলের বাড়িতে পুজো হত। পরে পুজো এখানে নিয়ে আসা হয়। মাকে অভয়া রূপে পূজিত। উলটো রথের দিন কাঠামো পুজোর মাধ্যমে পুজোর প্রক্রিয়া শুরু হয়।”
পুজোর দিনগুলোয় বাড়ির পুরনো ইটগুলিতে নতুন ছোঁয়া লাগে। বাড়ির সদস্যরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেকে এই চারদিন একত্র হন।