কয়েক মাস ধরেই ঊর্ধ্বমুখী আনাজের দাম। আনাজের কারবারিদের দাবি, মরসুমি আনাজের পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজ, রসুনের মতো মশলা জাতীয় আনাজের দাম।
গত কয়েক দিন ধরে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা প্রতি কেজি, রসুন বিক্রি হচ্ছে মান অনুযায়ী ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজিতে। হরিহরপাড়ার এক আনাজের কারবারি একসাদুল শেখ বলেন, ‘‘বর্ষাকালে মরসুমি আনাজের দাম কিছুটা বেশি থাকে। এ বছর পেঁয়াজ, রসুনের দাম তুলনামূলক ভাবে চড়া। পেঁয়াজের দাম আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।” আনাজের কারবারিদের দাবি, গত প্রায় তিন সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে অনেকটা। মাসখানেক আগেও হরিহরপাড়া, নওদা-সহ জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা প্রতি কেজি। ২০ দিন আগে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা কেজি। সেই পেঁয়াজ গত দু’ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়। সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ চাষ হয় নওদা ব্লকে। হরিহরপাড়া, বেলডাঙা ব্লকেও পেঁয়াজ চাষ হয়।
পেঁয়াজ চাষিদের একাংশের অভিযোগ, পেঁয়াজ সংরক্ষণের সুযোগ না থাকায় খেত থেকে তোলার পর পেঁয়াজ বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন তাঁরা। অনেক চাষি ঘরোয়া পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে থাকেন। যদিও বর্ষার শুরু থেকে সেই পেঁয়াজ পচতে থাকে। ফলে জেলার বিভিন্ন বাজারে বর্ষাকালে নাসিকের পেঁয়াজ দেখা যায়। আনাজের কারবারিদের দাবি নাসিক থেকে পেঁয়াজ জেলার হাটে-বাজারে কম আসছে। যার ফলে চড়ছে পেঁয়াজের দাম। অন্যদিকে, গত প্রায় ২০ দিনের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
আনাজের কারবারিদের দাবি, মুর্শিদাবাদ জেলায় রসুনের চাষ কম হয়। নদিয়া, হুগলি জেলা থেকে রসুন জেলায় আসে। তা ছাড়া, ভিন রাজ্য থেকে রসুন আমদানি হয়। জোগান কম থাকার কারণে রসুনের দাম চড়ছে বলে দাবি আনাজের কারবারিদের।
তবে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে আদা। উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে নতুন আদা আমদানি হওয়ায় খোলা বাজারে আদা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। দু’ সপ্তাহ আগেও সেই আদা বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। ধান্যগঙ্গা কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্যান পালন দফতরের বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞ চন্দা সাহা পারিয়া বলেন, “পেঁয়াজ সংরক্ষণের সুযোগ না থাকায় এই সময়ে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়ে। আমরা বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষে চাষিদের উৎসাহ দিচ্ছি। আদা, রসুনের জন্য অন্য জেলা বা অন্য রাজ্যের উপর অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্ভর করতে হয়। ফলে জোগান কম হলে দাম কিছুটা বাড়ে।”