• দেউচা পাচামি খনি এলাকায় সবুজায়নের লক্ষ্যে অভিযান
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: দেউচা পাচামি কয়লা খনি এলাকার গাছ কাটার বিকল্প হিসাবে সবুজায়নের লক্ষ্যে নামলেন জেলাশাসক। এই বর্ষাতে প্রকল্প এলাকার মধ্যে মথুরাপাহাড়িতে সাড়ে ৫ হাজার গাছের চারা লাগানো শুরু হয়ে গিয়েছে। শাল, সেগুন, মেহগনি জাতীয় দেশি গাছের চারা পোঁতা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতাতেই চলছে এই সবুজায়ন। প্রধান লক্ষ্য, খনি করতে গিয়ে যতগুলি গাছ কাটা পড়বে, তার কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গুণ গাছ নতুন করে লাগানো। সেই লক্ষ্যেই সবুজায়ন শুরু হল ওই প্রস্তাবিত খনিশিল্প এলাকায়।

    মহম্মদবাজারের দেউচা পাচামি কয়লা খনি এলাকার মধ্যে চাঁদা মৌজার মথুরাপাহাড়ি এলাকাতে বেশ কিছু ইস্যু নিয়ে কয়েকদিন ধরেই এলাকায় বিতর্ক দেখা দিচ্ছিল। সেখানে যেমন শাসকদলের ব্লক সভাপতি ছিলেন, তেমনই এলাকার আদিবাসী নেতা হিসাবে পরিচিতরাও কয়েকটি ইস্যুতে বেঁকে বসেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, বাইরের লোকজনের চাকরি আগে দেওয়া হচ্ছে কেন, তা প্রশাসন ঠিকঠাক ভাবে জবাব দিচ্ছে না। এছাড়াও আরও দ্রুত জমি কিনে চাকরি দেওয়ার দাবি সহ এমন একাধিক বিষয় নিয়ে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতাতে তাঁরা কিছুটা বিরোধিতা শুরু করে। মঙ্গলবার বিকালে বিডিও অফিসে অবশ্য সেই জটিলতা মিটেছে। আর এদিকে প্রশাসন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে একপ্রকার চালিয়ে ব্যাট করতে শুরু করেছে। যে মথুরাপাহাড়ি প্রাথমিক স্কুলকে খনির জন্য স্থানান্তরিত করতে হবে তার বিকল্প জায়গা খোঁজা, নতুন স্কুল বিল্ডিংয়ের টেন্ডার তৈরি প্রায় চূড়ান্ত। ফলে প্রাথমিক স্কুল সরানোর বিতর্কের ইতি পড়তে চলেছে। এছাড়াও ওই এলাকায় একটি রাস্তা বানানোও হবে খুব শ্রীঘ্রই। পানীয় জলের ব্যবস্থাও করা হবে। এছাড়াও মূল যে সমস্যাটি প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছিল অর্থাৎ গাছ কাটা তা এবার মিটতে চলেছে। ওই এলাকায় খনি তৈরির জন্য গর্ত খুঁড়তে গিয়ে যে ৭০০র অধিক গাছ কাটা পড়বে, তার বিকল্প গাছ লাগানোর ব্যবস্থা আগেভাগেই শুরু করে দিল। ট্রাক্টরে করে বিভিন্ন ফার্ম থেকে শাল, সেগুন গাছ আনা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাজে লাগিয়ে গর্ত খোঁড়া হচ্ছে। সেখানে জালের বেড়া দিয়ে গাছগুলিকে পরপর পোঁতা হচ্ছে। প্রাথমিক ধাপে ধাপে সাড়ে ৫ হাজারের অধিক গাছ লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, এই বর্ষাকালেই গাছগুলি লাগিয়ে দেওয়া হবে। এলাকার লোকজনই উৎসাহ নিয়ে গাছ লাগাচ্ছেন। বড় কোনও প্রোজেক্ট হলে যেমন কিছু গাছ ধ্বংস হবে, তেমনই আমাদের পরিবেশের দিকটিও খেয়াল রাখতে হবে। সেই লক্ষ্যেই সবুজায়নে নেমেছি। আরও বহু এলাকায় গাছ লাগানো হবে। এলাকায় যার যত সমস্যা আছে, সবকিছুই প্রশাসনিক ভাবে মিটমাট করা হচ্ছে এবং হবে। প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতেই এগচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)