• স্বাস্থ্যসাথীতে অনিয়ম ঠেকাবে এআই, কৃষ্ণনগরের নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে কঠোর হতে এই উদ্যোগ
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নার্সিংহোমগুলোর অনিয়ম ঠেকাতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)-এর সাহায্য নিচ্ছে স্বাস্থ্যদপ্তর। এবার এআই ক্যামেরার মাধ্যমে রোগীর ছবি তুলে পাঠাতে হবে স্বাস্থ্যভবনে। একবার ছবি তুললেই হবে না। ধাপে ধাপে মোট চারবার রোগীর ছবি তুলতে হবে। তারপর তা নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করতে হবে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা থাকা সমস্ত হাসপাতালের জন্য এই ব্যবস্থা চালু করেছে রাজ্য সরকার। তবে বিশেষ করে নার্সিংহোমগুলোর জন্যই এই কড়াকড়ি স্বাস্থ্যদপ্তরের। ছবি আপলোড করলে তবেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রোগীর চিকিৎসার টাকা ক্লেম করতে পারবে নার্সিংহোমগুলো। যদি এআই ক্যামেরা রোগীকে চিনতে না পারে তাহলে সমস্যায় পড়তে হবে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে। তবে সেক্ষেত্রে রোগীর চিকিৎসা মাঝপথে থামানো যাবে না। এই এআই প্রযুক্তির ব্যবহার স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে নার্সিংহোমগুলোর অনিয়ম অনেকটাই ঠেকাবে বলে মনে করছে স্বাস্থ্যদপ্তর। 

    এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘ডাক্তারদের এখন অপারেশন করার সময় ওটি নোট লিখতে হয়। পাশাপাশি কয়েক দিন হল এআই ক্যামেরার প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে। সেই ক্যামেরায় রোগীর ছবি তুলে নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করতে হয়। তবেই সেই নার্সিংহোমের জন্য স্বাস্থ্যসাথীর টাকা দাবি করতে পারে।’

    স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির জন্য একটি নির্দিষ্ট মোবাইল অ্যাপ রয়েছে। যেখানে নার্সিংহোমগুলিকে আইডি, পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে তাদের অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়েছে। সেই অ্যাপেই রয়েছে এআই ক্যামেরা। যা দিয়ে রোগীর চারবার ছবি তুলতে হবে। প্রথমবার ছবি তোলা হবে যখন রোগী স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। দ্বিতীয়বার ছবি তোলা হবে অপারেশনের আগে। তৃতীয়বার রোগীর ছবি উঠবে অপারেশনের পর। সবশেষে চতুর্থবার রোগীকে যখন হাসপাতাল বা নার্সিংহোম থেকে ছাড়া হবে তখন তাঁর ছবি তোলা হবে। শর্ত হল, চারদফাতেই রোগীকে চেনাতে হবে এআই ক্যামেরার দ্বারা। কোনও একদফায় ক্যামেরা যদি রোগীকে চিনতে না পারে তাহলে নার্সিংহোমের অনিয়ম ধরা পড়ে যাবে।

    স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে অনিয়মের ঘটনা নতুন নয়।‌ মুখ্যমন্ত্রীর জনমুখী এই প্রকল্পের সরকারি টাকা হাতানোর নানা পন্থা খুঁজে নিয়েছে একাধিক নার্সিংহোম। এর পিছনে জেলায় জেলায় সক্রিয় রয়েছে অসাধু চক্রও। 

    বিষয়টা যে প্রশাসনের নজরে নেই, এমনটা নয়। কারণ এই নিয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে স্বাস্থ্যদপ্তরে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অনিয়মের জন্য একাধিক নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও নিদর্শন রয়েছে। মোটা টাকার জরিমানাও করা হয়েছে একাধিক নার্সিংহোমকে। এই অসাধু নার্সিহোমগুলির জন্যই স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে রাজ্য সরকারকেও আরও বেশি সচেতন হতে হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)