• এক বছর আগেই বদলি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত, উত্তরবঙ্গ সিন্ডিকেটের ডাক্তারদের দ্রুত রিলিজ দিতে তৎপরতা শুরু
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: খাতায় কলমে এক বছর আগে তাঁরা অন্যত্র বদলি হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু উত্তরবঙ্গ সিন্ডিকেটের হাত মাথার উপর থাকায় চিকিৎসকরা নিজেদের পছন্দের জায়গা থেকে যাননি। এবার তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল স্বাস্থ্যদপ্তর। প্রত্যেককে দ্রুত বদলি হওয়া হাসপাতালে যোগ দিতে বলা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন হাসপাতাল থেকে কাদের বদলি করা হয়েছে সেই তালিকা স্বাস্থ্যদপ্তর নিয়েছিল। কেন তাদের রিলিজ করা হয়নি সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছ’জন চিকিৎসকের বদলির নির্দেশ আসে। কিন্তু তাঁরা যাননি। ছ’জন চিকিৎসকই উত্তরবঙ্গ লবির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।

    সেই তালিকায় সিন্ডিকেটের অন্যতম মাথা অভীক দে’র এক আত্মীয়ও রয়েছেন। তাঁকে আগেই ঝাড়গ্রামে বদলি করা হয়। কিন্তু তাঁকেও এতদিন রিলিজ দেওয়া হয়নি। তাঁকেও এবার দ্রুত ঝাড়গ্রামে যেতে বলা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই তালিকায় বিরূপাক্ষ বিশ্বাসও ছিলেন। তিনি সিন্ডিকেটের অন্যতম মাথা। তাঁকে এক বছর আগে কাকদ্বীপে বদলি করা হয়েছিল। তিনি যাননি। তাঁর দাবি, রিলিজ না পাওয়ার কারণেই তিনি যাননি। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, বিভাগে চিকিৎসক না থাকার কারণেই তাঁকে রিলিজ দেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে নির্দেশ আসার পরই তাঁকে কাকদ্বীপে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে কাজে যোগ দিতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন। তাঁরা বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। তবে শুধু বর্ধমান নয়, আরও কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজে এই পরিস্থিতি রয়েছে। উত্তরবঙ্গ সিন্ডিকেটের ছত্রচ্ছায়ায় তাঁরা রয়েছেন। 

    এক চিকিৎসক বলেন, তাঁদের কেন এতদিন ধরে রিলিজ দেওয়া হয়নি সেটা বোঝা যাচ্ছে না। এর পিছনে রহস্য রয়েছে। অনেকের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর করা হয়নি। যেদিন বদলির অর্ডার হয়েছে তার কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিরূপাক্ষদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর হয়নি। তাঁরা নিজেদের পছন্দমতো বদলি করতেন। 

    বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের আন্দোলনকারী চিকিৎসক গৌরাঙ্গ প্রামাণিক বলেন, ওঁরা শুধু পোস্টিং ঠিক করতেন না, নম্বর বাড়ানো-কমানোতেও তাঁদের হাত ছিল। অনেককেই অনার্স পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এরকম কয়েকজনের নাম কর্তৃপক্ষের কাছে জমা করা হয়েছে। তাঁরা কীভাবে অনার্স পেয়েছেন, সেটা খতিয়ে দেখা উচিত। পড়াশোনা না করে তাঁদের ছত্রচ্ছায়ায় থাকলেই ভালো নম্বর পাওয়া যেত। যাঁরা তাঁদের সঙ্গে থাকতেন না তাঁদের নম্বর কমিয়ে দেওয়া হতো। বিভিন্ন কলেজেই তাঁরা এই নিয়ম কার্যকর করেছিলেন। তবে শুধু ওই দু’জন নয়, আরও অনেকেই রয়েছেন। তাঁরা এখন শিবির বদলানোর জন্য মরিয়া চেষ্টা করছেন। এক আধিকারিক বলেন, বদলির নির্দেশ আসার পরও কেন নির্দিষ্ট কিছু চিকিৎসককে রিলিজ করা হয়নি তা স্বাস্থ্যদপ্তর খতিয়ে দেখছে। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)