• চাকরির পরীক্ষার ‘যুদ্ধ’ সামলে প্রতিমা গড়ছেন কৌশিক ও রাজ
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: একজন স্নাতকোত্তর, অন্যজন স্নাতক। চাকরির পরীক্ষায় বসেছেন। কিন্তু, সাফল্য মেলেনি। তবে হার মানেননি তাঁরা। সেই ‘যুদ্ধ’ জয়ের প্রস্তুতি সামলে নেমে পড়েছেন প্রতিমা গড়তে।  তাঁদের মনে উঁকি দেয় শিল্পীসত্ত্বা। সেই টানে এবারের দুর্গাপুজোর প্রতিমা গড়ছেন পুরাতন মালদহের দুই তরুণ মৃৎশিল্পী রাজ পাল এবং কৌশিক পাল। 

    ২০২৩ সালে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সংস্কৃতে স্নাতকোত্তর হন পুরাতন মালদহের সাহাপুরের ছাত্র কৌশিক পাল। ২০২১ সালে মালদহ কলেজ থেকে একই বিষয়ে স্নাতক হয়েছেন তিনি। এই তিন বছরে ক্লার্ক, খাদ্যদপ্তরের পরীক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু, চাকরি জোটেনি। তবে এখনও হাল ছাড়েননি কৌশিক। পুজোর আর এক মাসের কম সময় বাকি। সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের ৫০ মিটার দূরে তাঁর বাবা তথা এলাকার জনপ্রিয় মৃৎশিল্পী বিমল পালের কারখানা। সেখানে এবার ১১টি বড় দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজ চলছে। সেগুলি পুরাতন মালদহ এবং ইংলিশবাজারের বিভিন্ন ক্লাবে পাঠানো হবে। এখন সেই কাজেই মগ্ন কৌশিক।

    বুধবার কারখানা গিয়ে দেখা গেল, বিমলবাবু একপাশে কাজ করছেন। অন্যদিকে তাঁর ছেলে মনযোগ সহ প্রতিমায় মাটির প্রলেপ দিচ্ছেন। এতে তাঁর আক্ষেপ নেই। বরং উৎসাহ নিয়ে চব্বিশ বছরের যুবক কৌশিক বলেন,  ১১টা প্রতিমার মধ্যে সাবেকি এবং মডেলের কাজ হবে। কাজ জোরকদমে চলছে। পুজোর পর চাকরির ফর্ম বেরোলে পরীক্ষা প্রস্তুতি নেব। 

    একই কাহিনী সাহাপুরের ছাত্র রাজ পালেরও। তিনি ২০২২ সালে ফিজিক্যাল এডুকেশনে স্নাতক হয়েছেন। এক বছর ধরে পুলিস সহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা দিয়েছেন। এখন তাঁর ফাঁকে মৃৎশিল্পীর কাজে মন দিয়েছেন। পঞ্চায়েত অফিস থেকে দেড় কিমি দূরে নালাগোলা রাজ্য সড়কের ধারে তাঁর বাড়ি। রাজের বাবাও বিশ্বনাথ পাল এলাকায় জনপ্রিয় মৃৎশিল্পী। তাঁর কারখানায় এবার ১৪টি বড় প্রতিমা হচ্ছে। রাজের কথায়, আমরা বাবা, ঠাকুর দাদা এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। আমি বিএ পাশ করেছি। চাকরির চেষ্টায় আছি। না হলে এই পেশাই বেছে নেব। তবে এবার কর্মীর অভাবে কম সংখ্যক প্রতিমা গড়া হচ্ছে। 

    (কৌশিক পাল। - নিজস্ব চিত্র। )
  • Link to this news (বর্তমান)