সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: কুমোরটুলি নেই। রাস্তার পাশেই প্রতিমা তৈরি করতে হয়। রাস্তার পাশে রেখে প্রতিমা বিক্রি করতে হয়। কখনও যানবাহনের ধাক্কা লেগে প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্তও হয়। বৃষ্টি নামলে তড়িঘড়ি পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হয় প্রতিমা। নতুন প্রজন্মের প্রতিমা শিল্পীদের স্কিল ডেভেলপমেন্টের ব্যবস্থাও নেই। সব মিলিয়ে ভালো নেই আলিপুরদুয়ারের প্রতিমা শিল্পীরা। অথচ তাঁরাই প্রতিমা তৈরি করে শারদ উৎসবের আনন্দ বয়ে আনেন।
আলিপুরদুয়ারের শামুতলা রোডের নোনাই পাড়, আলিপুরদুয়ার হাটখোলার দুর্গাবাড়ি রোড, নিউ টাউন, প্যারালাল রোড, দমনপুর ও জংশনে আছে বেশ কয়েকটি বড়মাপের প্রতিমা তৈরির কারখানা। জায়গার অভাবে ব্যস্ত রাস্তার পাশেই কাঠামো রেখে প্রতিমার গড়েন মৃৎশিল্পীরা। নানান প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে তাঁরা প্রতিমা গড়েন বলে জানান। তাঁদের দাবি, প্রশাসনের কাছে বহুবার আর্জি জানিয়েও কুমোরটুলির জায়গা মেলেনি। শহরে ৫০-৬০টি মৃৎশিল্পী পরিবার কষ্ট করেই প্রতিমা বানিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। শহরের মৃৎশিল্পীরা সরব হয়েছেন নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের প্রতিমা তৈরিতে স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য সরকারিভাবে কর্মশালা না হওয়ায়। নোনাইপাড়ে জেলা মৃৎশিল্পী সমিতির সম্পাদক ৬৯ বছরের গোপাল পালের প্রতিমা তৈরির নিজস্ব কারখানা আছে। গোপালবাবু বলেন, আমার হয়তো নিজস্ব কারখানা আছে। কিন্তু, সেই সুবিধা তো সকলের নেই। বাড়িতে জায়গা না থাকায় অনেকেই রাস্তার পাশেই কাঠামো রেখে প্রতিমা তৈরি করছেন। কুমোরটুলি থাকলে সুবিধা হতো সেই মৃৎশিল্পীদের। প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরেও কুমোরটুলির জন্য শহরে আজও জায়গা মিলল না।
মৃৎশিল্পীরা জানান, সৌরভ চক্রবর্তী বিধায়ক থাকার সময় কুমোরটুলির জন্য একবার একটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু, সেই জায়গাটি পছন্দ হয়নি। তারপর প্রশাসনের তরফে এনিয়ে আর কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। শহরের মৃৎশিল্পে আরও সঙ্কট ঘনিয়ে আসছে আগের মতো আর নিম্নঅসম থেকে প্রতিমার বরাত না আসায়। গোপালবাবু বলেন, কয়েক বছর ধরে নিম্ন অসম থেকে আর প্রতিমার বরাত আসছে না। ফলে আমরা আরও বেশি করে সঙ্কটে পড়েছি। (প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা।-নিজস্ব চিত্র)