• ‘ফাঁকিবাজ’ চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলেছে এমজেএন
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, কোচবিহার: এমজেএন মেডিক্যাল কলেজে ‘ফাঁকিবাজ’ চিকিৎসকদের তালিকা প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে এবার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ রীতিমতো বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স ঘেটে গত দু’মাসে কোন চিকিৎসক কতদিন উপস্থিত ছিলেন তার তালিকা প্রস্তুত করেছে। 

    বিভিন্ন বিভাগের মোট  ১১৭ জন চিকিৎসকের সেই তালিকায় দেখা গিয়েছে এমন চিকিৎসক আছেন, যিনি ২৫ দিনের মধ্যে একদিনও উপস্থিত ছিলেন না। যদিও মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, হয়তো তাঁদের নাম বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্সে যুক্ত হয়নি। তবে এমনও অনেকে আছেন যাঁরা মাসে পাঁচদিন, এমনকী তিনদিন এসেছেন। জুলাই ও আগস্ট মাসের অ্যাটেন্ডেন্স ঘেটে দেখা গিয়েছে, কোনও কোনও চিকিৎসকের উপস্থিতির হার মাত্র এক, দুই, তিন, চার দিন করে। তবে উল্টো চিত্রও রয়েছে। উপস্থিতির হার ১০০ শতাংশও আছে। মেডিক্যাল কলেজ সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, যে সমস্ত চিকিৎসকের উপস্থিতির হার ২০ শতাংশেরও কম তাঁদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ছুটি কাটা ও প্রয়োজনে বেতন কাটার মতো পদক্ষেপ নিতে পারে কর্তৃপক্ষ। 

    কোচবিহারের মহারাজা জিতেন্দ্রনারায়ণ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডাঃ সৌরদীপ রায় জানিয়েছেন, বিষয়টি প্রিন্সিপালের অধীনে। তাই যা পদক্ষেপ করার তিনিই করবেন। তবে একাংশ চিকিৎসকের ধারাবাহিক অনুপস্থিতির কারণে পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। বিষয়টি প্রিন্সিপালকে জানানো হয়েছে। 

    প্রিন্সিপাল ডাঃ নির্মলকুমার মণ্ডল বলেন, যাঁদের উপস্থিতির হার কম তাঁদের নামের তালিকা করা হয়েছে। তাঁদের নোটিস পাঠানো হবে। যেসমস্ত শিক্ষক ও মেডিক্যাল অফিসারের ডিউটি সংক্রান্ত সমস্যাগুলি চিহ্নিত করা যাচ্ছে না সেগুলিও ঠিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। 

    হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফাঁকিবাজি চিকিৎসকরা নিয়মিত পরিষেবা দিলে আউটডোর, অপারেশন থিয়েটার, ইন্ডোরে পরিষেবা আরও উন্নত হতে পারে। সম্প্রতি কোচবিহার মেডিক্যালের বিভিন্ন সমস্যা বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। যা নিয়ে প্রচুর জলঘোলাও হয়েছে। এমনিতেই প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক কম। তার উপরে একাংশ চিকিৎসক ঠিকমতো মেডিক্যাল কলেজে আসেন না। মাসে দুই-তিন দিন থেকে শুরু করে সাত-আট দিন এসেছেন এমন চিকিৎসকের সংখ্যাটা কম নয়। 

    মেডিক্যাল কলেজের রেডিওলজি বিভাগে এমন সমস্যা বেশি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যার জন্য টেস্টের ডেট পেতে অনেকদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে রোগীদের। বিষয়টি এখন থেকে স্বাস্থ্যভবনকেও জানানো হয়েছে। চক্ষু বিভাগে একজন মাত্র চিকিৎসক, অন্যদিকে ফরেন্সিক ও ইএনটি বিভাগে মাত্র একজন করে শিক্ষক। তাই সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিতে পরিষেবা উন্নতির জন্য চিকিৎসক চেয়ে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যভবনে তদবির শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে সমস্ত চিকিৎসক যাতে নিয়মিত মেডিক্যাল কলেজে আসেন, সেদিকে নজর রাখতেই এই কড়াকড়ি বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। -নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)