• অভিশপ্ত রাতের ভিডিও এবার সিবিআই-হাতে?
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর কাণ্ডের তদন্তে নতুন দিশা দেখাচ্ছে অভিশপ্ত রাতের একটি মোবাইল ভিডিও। সেদিন কর্তব্যরত এক নার্স তা তুলেছিলেন বলে খবর। অবশেষে সেটির হদিশ পেয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। সিবিআইয়ের দাবি, তাদের হাতে এমন একটি ভিডিও এসেছে, যা তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। গত ৮ আগস্ট রাতে তরুণীর সঙ্গে কারা কারা ছিলেন এবং কী হয়েছিল, সবটাই নাকি সেই নার্সের মোবাইলে তোলা ভিডিওতে আছে। ইতিমধ্যে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। সেই পর্বে গুরুত্বপূর্ণ ক্লু মিলেছে বলে খবর। একইসঙ্গে ঘটনার দিন গভীর রাতে তদানীন্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের চেম্বার কেন খোলা হয়েছিল, সেই রহস্যভেদেরও চেষ্টা চলছে।

    এই ঘটনার তদন্তে নেমে ওই দিন ডিউটিতে থাকা সকলের তালিকা তৈরি করে সিবিআই। জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে ডাকা হয় নার্সদেরও। তদন্তকারীরা বুঝতে পারছিলেন, আসল ঘটনা নিয়ে নার্সদের কাছে তথ্য আছে। প্রথমে অবশ্য তা স্বীকার করানো যায়নি। নার্সরা প্রত্যেকেই একবাক্যে বলেন, ৯ আগস্ট সকালে ঘটনার কথা জেনেছিলেন। কিন্তু এক ফ্লোরে ডিউটি করার পরও কেন তাঁরা কিচ্ছু টের পেলেন না? এ নিয়ে বারবার জিজ্ঞাসাবাদ চলে। শেষপর্যন্ত নাম প্রকাশ্যে আনা যাবে না, এই শর্তে মুখ খুলতে রাজি হন এক নার্স। জানান, ওইদিন রাতে তোলা একটি ভিডিও আছে। সেটি দেখলে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে। সেটি তিনি এজেন্সির হাতে তুলে দিয়েছেন বলে খবর। সিবিআইয়ের দাবি, ওই ভিডিও দেখে জানা গিয়েছে রাত একটা নাগাদ উপরে উঠেছিলেন নির্যাতিতা। সঙ্গে ছিলেন আরও চার-পাঁচজন। তার মধ্যে এমন একজন ছিলেন, যিনি এই ব্লকে সাধারণত আসতেন না। কিন্তু অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের কাছের লোক বলে পরিচিত ছিলেন সেই ব্যক্তি। তরুণীকে টেনে সেমিনার হলে ঢোকানো হচ্ছে, সেই দৃশ্য নাকি ধরা আছে ওই ভিডিওতে। এমনকী ঘটনার পর কোথায় হাত ধোয়া হয়েছিল, সেটাও। ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকজনের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে বেশ কিছু বাইরের লোকজন ছিল বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে ওই ভিডিও। তাঁদের চিহ্নিত করে ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা শুরু হয়েছে বলে খবর।

    বুধবার তলব করা হয়েছিল চার ইন্টার্ন ডাক্তারকে। ভিডিওতে দেখা ঘটনা প্রসঙ্গ জানতে চাওয়া হয় তাঁদের কাছে। যদিও ওই ভিডিও আসল নাকি এআই দিয়ে করা, সেটা জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষা হচ্ছে। সিবিআইয়ের দাবি, মূল ঘটনাস্থলের প্রমাণ লোপাট করতে অপারেশন থিয়েটার থেকে আনা হয়েছিল কেমিক্যাল। সেটি ফিনাইলের সঙ্গে মিশিয়ে ঢালা হয়েছিল সেখানে। জুনিয়র ডাক্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ করে অফিসাররা জেনেছেন, ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালাতে ঘনিষ্ঠ ইন্টার্ন ও পিজিটিদের চাপ দেন সন্দীপই। এমনকী পুলিসকেও সেকথা বোঝানোর চেষ্টা করেন। তদন্তকারীরা জেনেছেন, ঘটনার দিন রাতে সন্দীপের চেম্বার খুলেছিলেন তাঁর এক ঘনিষ্ঠ। তাহলে কি অধ্যক্ষের নির্দেশমতো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিকৃত করা হয়েছিল সেখানেই? নিশ্চিত হতে পুরো ক্লিপ ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)