• ডাক্তারদের মাথায় সুপ্রিম কোর্টকে অবমাননার খাঁড়া
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের ডেডলাইন শেষ হয়েছে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা। তারপরও কাজে যোগ দেননি রাজ্যের আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। আর তাতেই রীতিমতো বিস্মিত জাতীয় মহল। এর আগেই শীর্ষ আদালতের আবেদন মেনে দেশজুড়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন চিকিৎসকরা। রাজ্যে রাজ্যে বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ চললেও পরিষেবা বন্ধ নেই। ব্যতিক্রম কলকাতা। আইনি পরিভাষায় সর্বোচ্চ আদালতের অর্ডার (নির্দেশ) জারির পরও। অর্থাৎ আবেদন, অনুরোধ, নিবেদন নয়। তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে এভাবে তোয়াক্কা না করার ঘটনা একপ্রকার নজিরবিহীন। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারও সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করে না। বাংলার জুনিয়র ডাক্তাররা এই নতুন প্রবণতার জন্ম দেওয়ায় আইন মন্ত্রক অথবা রাজনৈতিক মহল, সকলেই বিস্মিত। ঩ আইনমন্ত্রক সূত্রে জানা যাচ্ছে, এর অর্থ হল সরাসরি আদালতের অবমাননা। ১৯৭১ সালের কনটেম্পট অব কোর্টস অ্যাক্ট অনুযায়ী, আদালত অবমনানর সাজা সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড, জরিমানা, অথবা সাজা ও জরিমানা দুটোই। আদালত এই জেল-জরিমানা মকুব করে দিতে পারে, যদি আদালত অবমাননাকারী আদালতে এসে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সেক্ষেত্রেও আ‌ইনে বলা রয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট স্থির করবে, সেই ক্ষমাপ্রার্থনা যথেষ্ট কি না। আইন মন্ত্রক সূত্র এবং সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবীদের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা হলে আদালত প্রথমে জবাবদিহি চাইবে। এরপর সন্তোষজনক জবাব না পেলে ঘোষণা করা হবে সাজা। আইন মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, আইনসভা, প্রশাসন এবং বিচারবিভাগ—এই প্রতিটি ব্যবস্থাই সংবিধান নির্মিত রাষ্ট্রনীতি। সেখানে কারণ না দর্শিয়ে খোদ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অর্থ, সংবিধান নির্ধারিত রাষ্ট্রনীতিকেই অগ্রাহ্য করা। আইন বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সংবিধানের ১২৯ এবং ১৪২ ধারায় আদালতের অবমাননা ধার্য করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের হাতেই এই ধারায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সর্বোচ্চ ক্ষমতা রয়েছে। সুতরাং আগামী শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট কড়াভাবে জবাবদিহি চাইতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে বিজেপিও কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়াকে কোনওভাবেই সমর্থন করছে না। কারণ স্বাস্থ্যমন্ত্রকেরও নির্দেশিকা রয়েছে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের। সেটাও মানা হয়নি। 
  • Link to this news (বর্তমান)