• আর জি কর কাণ্ডে কোনও কর্মসূচি নেই! তৃণমূল যুব সংগঠনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন শাসক দলের অভ্যন্তরে
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: যেকোনও রাজনৈতিক দলে ছাত্র ও যুব শাখাকে মূল চালিকা শক্তি হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। দলের সংগঠন এগিয়ে চলে ছাত্র-যুবদের কাঁধে ভর করেই। কিন্তু ইদানীং দেখা গিয়েছে, খোদ রাজ্যের শাসক দলের যুব সংগঠন একেবারে ‘নিষ্ক্রিয়’। তাদের কোনও কর্মসূচি এবং সাংগঠনিক পর্যালোচনা বৈঠক নেই। এই আলোচনাই উঠে এল তৃণমূলের অভ্যন্তরে। তৃণমূল ভবনে বসা রাজ্যস্তরের একাধিক নেতার কথাবার্তায় ধরা পড়েছে, আর জি করের ঘটনা নিয়ে বিরোধীদের যুব সংগঠন যখন প্রতিদিন রাস্তার নামছে, তার জবাব দেওয়ার জন্য তৃণমূল যুব সংগঠনকে পাওয়া যাচ্ছে না। আর জি কর কাণ্ডে একমাস ধরে লাগাতার কর্মসূচি করে চলেছে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস প্রভৃতি বিরোধী দল। ওই কর্মসূচি থেকে রাজ্যের সরকার ও তৃণমূলকে নিশানা করছে বিরোধীরা। বিশেষ করে বিজেপি ও সিপিএমের ছাত্র-যুবদের প্রায় প্রতিদিনই রাস্তায় দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বিরোধীদের আনা বক্তব্যের জবাব দিতে তৃণমূলের যুব সংগঠনকে একেবারেই ‘পাওয়া যাচ্ছে না’। এটাই উঠে এসেছে রাজ্যস্তরের তৃণমূল নেতৃত্বের আলোচনায়। 

    রাজ্য তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার মন্তব্য, আর জি করের ঘটনায় তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর সিবিআই প্রায় একমাস পার করে ফেলল। আমরা সকলেই সিবিআইয়ের কাছে দ্রুত বিচার চাইছি। কিন্তু এই বিচারের দাবি জোরালো করতে তৃণমূল যুব সংগঠনের কোনও কর্মসূচি নেই! যুব সংগঠনের উচিত ছিল, সিজিও কমপ্লেক্সেমুখী কোনও অভিযান করা কিংবা সিজিও কমপ্লেক্সের বাইরে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়া। কিন্তু তাদোর এই ধরনের কোনও কর্মসূচি করতে দেখা যায়নি। দলের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় আরও উঠে এসেছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবায় যে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে, তৃণমূল যুব সংগঠনের সেটাই তুলে ধরা উচিত ছিল। একইসঙ্গে দরকার ছিল তথ্য-পরিসংখ্যানসহ বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগের জুতসই জবাব দেওয়া। সামাজিক মাধ্যমে আরও সক্রিয় হওয়া উচিত রাজ্যের শাসক দলের যুব শাখার সদস্যদের। 

    তৃণমূল সূত্রের খবর, ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য শাখার কমিটি ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকে জেলায় জেলায় যুব সংগঠন কতদূর এগিয়েছে, যুব সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে কি না, তা নিয়েও কোনও পর্যালোচনা বৈঠক নেই। লক্ষ্য করার মতো বিষয় হল, ২১ জুলাই তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ব্যানারে ধর্মতলায় শহিদ দিবসের কর্মসূচি হয়েছে। অথচ সেখানে বক্তার তালিকায় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষের নাম ছিল না! তৃণমূলের অভ্যন্তরের আলোচনায় উঠে এসেছে, যুব সংগঠনের এক পদাধিকারীকে দল থেকে বলা হয়েছিল, একটি বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমের আলোচনাচক্রে যেতে, কিন্তু তিনি যেতে রাজি হননি। অন্যদিকে, তৃণমূলের ছাত্র শাখা ২৮ আগস্ট সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচি পালন করেছিল। দলনেত্রীর নির্দেশে ৩০ আগস্টও কর্মসূচির উদযাপন হয়েছিল কলেজের গেটে। তারপর আর কোনও কর্মসূচিতে ছাত্র শাখাকে দেখা যায়নি বলে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট। সবিস্ময়-প্রশ্ন উঠেছে, আর জি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের ডাক্তার সেল কোথায়!? সরকারের সপক্ষে বক্তব্য তুলে ধরতে ডাক্তার-নেতাদের এত ‘ঘাটতি’ কেন?
  • Link to this news (বর্তমান)