রান্না করতে গিয়ে হঠাৎ গ্যাস শেষ। বাড়িতে অতিরিক্ত সিলিন্ডার নেই। মাথায় হাত গিন্নির! এমন পরিস্থিতিতে মুশকিল আসান হতে চলেছে পাইপ লাইনের গ্যাস। বাড়ি বাড়ি নলবাহিত পানীয় জলের মতো পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সংযোগের উদ্যোগ নিয়েছে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি।কলকাতা, নিউ টাউনের পর এ বার দক্ষিণ শহরতলির রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা এলাকায় গ্যাস সরবরাহের জন্য যাবতীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানেই এই সংস্থা কাজ করছে। প্রথম ধাপ হিসেবে মূল রাস্তায় পাইপ বসানোর কাজ শুরু করেছেন বেঙ্গল গ্যাস কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভাকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রথম দফায় পুর এলাকার পূর্ত দপ্তরের রাস্তাগুলিতে খোঁড়াখুড়ি করে পাইপ বসানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
সেই কাজ ইতিমধ্যে কামালগাজি বাইপাস, হরিনাভি, হরহরিতলায় শুরু হয়েছে। এই কাজ শেষ হলেই পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের গলি ও অন্য রাস্তাতেও পাইপলাইন বসানো হবে বলে সূত্রের খবর। এমন খবরে খুশি সোনারপুরের বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা পম্পা দেবনাথ বলেন, ‘আমরা চার তলার ফ্ল্যাটে থাকি। লিফট নেই। ডেলিভারি বয় উপরে গ্যাস তুলতে চান না। পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ হলে আমরা খুব উপকৃত হব।’
পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস বলেন, ‘এখানে কাজ হবে তা নিয়ে আমাদের আগেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু রাস্তাটি পূর্ত দপ্তর দেখাশোনা করে, তাই তাদের অনুমতি নিয়ে খোঁড়াখুঁড়ি করছে বেঙ্গল গ্যাস। পুরসভার নিয়ন্ত্রণাধীন রাস্তায় পাইপলাইন বসানোর আগে আবারও একবার বৈঠক হবে।’ তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় আর কোন কোন জায়গায় এই পাইপ লাইন বসানোর কাজ হবে, সে তথ্য এখনও জেলা প্রশাসনের কাছে নেই।
পাইপ লাইন বসানোর কাজ শুরু হলেই যে গ্যাস শীগগির মিলবে এমন সম্ভাবনা নিয়ে অবশ্য সন্দেহ আছে। সোনারপুরের স্কুল শিক্ষক প্রদীপ পাল বলেন, ‘বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি অনেক দিন ধরে পাইপ লাইন পাতার কাজ করছে। কিন্তু আজও সেই লাইনের কাজ শেষ হয়নি। এ রাজ্যে পিএনজি (পাইপ ন্যাচারাল গ্যাস) সরবরাহ করার বরাত নিয়েছে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি। রাজ্য সরকার ও গেইলের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তারা এই কাজ করছে। জমি জটে কিছু কিছু জায়গায় পাইপ লাইন পাতার কাজ আটকে আছে।’
সংস্থার দাবি, রাজ্য সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে সেই জট ছাড়ানো হয়েছে। বেঙ্গল গ্যাসের এক কর্তা বলেন, ‘বৃহত্তর কলকাতার মানুষ যাতে দ্রুত রান্নার গ্যাস ও গাড়ির জন্য গ্যাস (সিএনজি) পান, সে জন্য বর্ধমান থেকে কলকাতা পর্যন্ত পাইপ লাইন পাতার কাজ চলছে। যে টুকু বাকি আছে তা আগামী ছ-সাত মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।’