এই সময়, মালদা: বছর দশেক আগের কথা। ভারতী ঘোষ সেই সময়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার। নাবালিকা ধর্ষণের মামলায় ৩ দিনের মাথায় পকসো আদালতে চার্জশিট পেশ করেছিল পুলিশ। সেটাই ছিল পকসো মামলায় দ্রুততম চার্জশিট। এ বার মালদা। হবিবপুরে এক আদিবাসী নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় ৯ দিনের মধ্যে জেলা পকসো আদালতে চার্জশিট জমা দিল পুলিশ।জানা গিয়েছে, হবিবপুর থানা এলাকার বাসিন্দা এক প্রৌঢ় কোয়াক ডাক্তার নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মাস দু’য়েক ধরে নিজের চেম্বারে ‘ডাক্তারি’ শেখাচ্ছিলেন। গত ২৮ অগস্ট সন্ধ্যায় ‘ইউরিন টেস্ট’ শেখাবেন বলে কিশোরীকে নিজের চেম্বারে ডেকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। জানাজানি হতেই উত্তেজিত গ্রামবাসী অভিযুক্ত চিকিৎসককে গাছে বেঁধে গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার পরে ট্রমার শিকার হয় ছাত্রীটি। সরকারি হোমে রেখে তার কাউন্সেলিং করানো হয়। রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে তার মা-বাবাকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, ‘পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি দ্রুত তদন্ত করে ১০ দিনের মধ্যে চার্জশিট আদালতে জমা দেবে বলে আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন।’
বাস্তবে দশ দিনও লাগল না। বুধবার মালদার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সম্ভব জৈন বলেন, ‘২৮ অগস্টের ঘটনা। ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা পড়েছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য স্যাম্পেল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু এভিডেন্স ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। চার্জশিটে মোট ৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। আশাকরি খুব দ্রুত ট্রায়ালও শুরু হয়ে যাবে।’
সাম্প্রতিক অতীতে মালদায় ধর্ষণ কেসে দ্রুত চার্জশিট জমা দেওয়ার নজির ছিল কালিয়াচক থানা এলাকার একটি মামলায়। সেক্ষেত্রে ৩৭ দিনে চার্জশিট জমা পড়েছিল। এ বার কী ভাবে এত দ্রুত তদন্ত করে চার্জশিট জমা দিল পুলিশ? আরজি কর কাণ্ডের জেরে কোনও চাপ কাজ করেছে?
অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ব্যাখ্যা, ‘অন্য কোনও ঘটনার প্রভাবে নয়। দ্রুত চার্জশিট জমা দেওয়ার কারণ, প্রথমত, কেসটি পকসো ধারায়। দ্রুত তদন্ত শেষ করার বিষয়টি আইনেই বলা আছে। দ্বিতীয়ত, অভিযোগ পাওয়ার পরে অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়েছে। মামলায় নথি হিসেবে বেশ কিছু নমুনা উদ্ধার করা গিয়েছে। নির্যাতিতা বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়েছে। ধৃত কোয়াক ডাক্তারের পুলিশ কাস্টডির মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে দ্রুততার সঙ্গে চার্জশিট দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ’