আর জি করের বর্জ্য পাচারে ‘বাংলাদেশি রবি’র নাম, কীভাবে সন্দীপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা? তদন্তে সিবিআই
প্রতিদিন | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
অর্ণব আইচ: আর জি কর হাসপাতাল থেকে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য পাচারে সিবিআইয়ের হাতে উঠে এসেছে ‘বাংলাদেশি রবি’র নাম। এই বাংলাদেশি রবি ও পঞ্চুর মতো কয়েকজনের হাত ধরেই আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের মদতে হাসপাতাল থেকে বর্জ্য বাইরে পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছে সিবিআই। এবার সন্দীপ ঘোষের পরিচিত আরও অন্তত ৪ জনের সন্ধান চালাচ্ছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
উত্তর কলকাতার বাসিন্দা রবি, পঞ্চুদের সন্ধান পেতে সম্প্রতি সিবিআই কয়েকটি জায়গায় তল্লাশিও চালায়। মূলত সিরিঞ্জ, গ্লাভস, ব্যবহার হওয়া স্যালাইন বোতল বাইরে বেআইনিভাবে রবি ও পঞ্চুর মাধ্যমে পাচার হত বলে অভিযোগ। এখন কীভাবে বর্জ্য পাচারে যুক্ত এই ব্যক্তিরা সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ হল, সিবিআই তা খতিয়ে দেখছে। এদিকে, একই সঙ্গে আর জি কর হাসপাতালের দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা সন্দীপ ঘোষ(Sandip Ghosh) ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে কীভাবে লেনদেন হয়েছে তা নিয়ে তদন্ত চলছে। সেই ব্যাপারে আরও তথ্য পেতে বুধবার সিজিও কমপ্লেক্সে নিজের দপ্তরে সন্দীপের স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষকে তলব করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তাঁকে ইডি আধিকারিকরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একই সঙ্গে সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসূন চট্টোপাধ্যায়কেও ইডি তলব করেছে। সম্প্রতি প্রসূনবাবুর বাড়িতেও ইডি হানা দেয়। তাঁকে সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি চালানো হয় সন্দীপ ঘোষের বাগানবাড়িতে।
এদিন এই দুর্নীতি মামলার মূল অভিযোগকারী স্বাস্থ্যকর্তা আখতার আলিকেও ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করে। সূত্র জানিয়েছে, তাদের কাছে আসা অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এন আর এস হাসপাতাল থেকে নির্গত হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৫০ কিলো বর্জ্য। সেখানে আর জি কর হাসপাতাল থেকে নির্গত হয়েছে মাত্র ৪৯ হাজার ৬০২ কিলো বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য। এই অভিযোগ আসার পর সিবিআইয়ের সন্দেহ হয়। গত বছর মার্চ মাসে আর জি কর কর্তৃপক্ষও একটি নির্দেশিকা দিয়ে জানায় যে, বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য সংগ্রহ, আলাদা করা ও নষ্ট করা ভালোভাবে হচ্ছে না। এই ব্যাপারে একাধিক অভিযোগ হাসপাতালে জমা হতে থাকে।
এই ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি তৈরি করে তদন্তও করে বলে জানা গিয়েছে। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট তৈরি করে হাসপাতালে জমা দেয়। কিন্তু এই রিপোর্ট আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ নিজের ক্ষমতাবলে বাইরে নিয়ে আসেননি। সিবিআইয়ের সূত্র জানিয়েছে, ওই তদন্ত রিপোর্টেই উল্লেখ করা আছে যে, শঙ্কর নামে সন্দীপ ঘোষের এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই এর নাটের গুরু। ওই ব্যক্তি সন্দীপের নির্দেশে নিজের টিম তৈরি করে আফজল নামে আরও এক ব্যক্তিকে নিয়ে। এই টিমের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন সন্দীপের দেহরক্ষী আফসার আলি। সিবিআই জানতে পারে যে, সন্দীপের মদতে ও আফসার আলির নির্দেশে শঙ্কর ওই বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য বাংলাদেশি রবি ও পঞ্চুর মাধ্যমে বাইরে পাচার নিয়ে কমিটি কিছু তথ্য চেপে যায় বলে জানিয়েছে সিবিআই।