আরজি কর-কাণ্ডে এ বার সিবিআইয়ের আতশকাচের তলায় তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত রায়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ সিবিআইয়ের অপরাধদমন শাখার আধিকারিকেরা সুদীপ্তের সিঁথির মোড় সংলগ্ন বিটি রোডের বাড়িতে হানা দেন। বিধায়কের মালিকানাধীন বাড়ি লাগোয়া নার্সিংহোমেও হানা দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত আরজি কর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানও বটে। এর পাশাপাশি তিনি রাজ্যের হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের সদস্য এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের প্রাক্তন সভাপতি।
প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে তল্লাশি অভিযান চালানোর পর সুদীপ্তের বাড়ি থেকে বেরোয় সিবিআই। তদন্তকারীরা বেরোনোর পর সুদীপ্ত সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, হাই কোর্টের তত্ত্বাবধানে তদন্ত চলছে। তাই তিনি তদন্তকারীদের সব রকম ভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত। সম্প্রতি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছিলেন যে, আরজি কর হাসপাতালের যন্ত্রপাতি নিজের নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছেন সুদীপ্ত। এই প্রসঙ্গে শ্রীরামপুরের বিধায়ককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “১৯৮৪ সালে আমি নার্সিংহোম তৈরি করি। বাম আমলে তিলে তিলে এটাকে দাঁড় করিয়েছি। যে কেউ আমার নার্সিংহোমে গিয়ে যাচাই করতে পারেন, আমি এমন কিছু কাজ করেছি কি না।”
দুপুর ১টা নাগাদ যখন সিবিআই আধিকারিকেরা সুদীপ্তের বাড়িতে হানা দেন, তখন নীচের তলার অফিসঘরেই ছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল বিধায়ক। সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও। তদন্তকারীদের একটি দল নার্সিংহোমটিতেও তল্লাশি অভিযান চালায়। তিন জন সিবিআই আধিকারিক জিজ্ঞাসাবাদ করেন সুদীপ্তকে। গোটা বাড়ি ঘিরে রেখেছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির সূত্রে খবর, আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতেই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে সুদীপ্তের বাড়ি এবং নার্সিংহোমে। চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্তের ভূমিকা বর্তমানে তদন্তকারীদের নজরদারির মধ্যে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৯ অগস্ট সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চারতলায় সেমিনার হলে মহিলা চিকিৎসকের রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগে সে রাতেই ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। ওই দিনই আরজি কর হাসপাতালে গিয়েছিলেন সুদীপ্ত। পরে আরজি করের ঘটনা নিয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠকও করেন তিনি।