আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তে ফের সক্রিয় হল ইডি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কলকাতার দুই জায়গায় তল্লাশি অভিযানে নেমেছে তারা। ইডি আধিকারিকদের সঙ্গে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ টালা এলাকায় একটি বহুতল আবাসনে হানা দেন ইডির আধিকারিকেরা। জানা যায়, ওই আবাসনেরই পাঁচ তলায় থাকেন সন্দীপ ঘোষ-‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী চন্দন লৌহ। সেখানে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। তল্লাশি অভিযান চলছে কালিন্দীর একটি ঠিকানাতেও।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিন্দীতে তল্লাশি অভিযান চলছে মেডিক্যাল সরঞ্জাম সরবরাহকারী সংস্থা অক্টেন মেডিক্যালের অফিসে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ চন্দনের ফ্ল্যাটে পৌঁছে কলিং বেল বাজান ইডির আধিকারিকেরা। ফ্ল্যাটেই ছিলেন চন্দন। তিনিই দরজা খুলে দেন। এর আগে গত ২৫ অগস্ট চন্দনের ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিল সিবিআই। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে গেল আর এক তদন্তকারী সংস্থা ইডি।
আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলির অভিযোগপত্রে নাম ছিল চন্দনের স্ত্রী ক্ষমা লৌহের। অভিযোগ ওঠে যে, আরজি কর হাসপাতাল চত্বরে ক্যাফেটেরিয়া খোলার জন্য নিয়ম বহির্ভূত ভাবে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া দেওয়া হয়েছিল ক্ষমাকে। ইডি সূত্রে খবর, চন্দনের স্ত্রীকে নিয়ম ভেঙে ক্যাফেটেরিয়া খোলার টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আর্থিক সুবিধা নেওয়া হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সিবিআইয়ের পর আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমেছে ইডিও। গত শুক্রবার আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের বেলেঘাটার বাড়ি-সহ সাত জায়গায় তল্লাশি চালান ইডির আধিকারিকেরা।
আরজি করের চিকিৎসক মৃত্যুর ঘটনার পর পরই কলেজের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ ওঠে, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি চলেছে। সে বিষয়ে তদন্তের জন্য গত ১৬ অগস্ট রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়। এক দিন পরেই কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে রাজ্য পুলিশের পরিবর্তে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে একাধিক বেনিয়মের তত্ত্ব উঠে এসেছে। মর্গ থেকে দেহ উধাও হওয়া থেকে শুরু করে রয়েছে হাসপাতালের জৈব বর্জ্য নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগও! এ বিষয়ে পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার। সেই মামলায় স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করে ইডি।