খেজুরির পাঁচুড়িয়া আগমনী মহিলা সঙ্ঘের পুজোর প্রস্তুতি জোরকদমে
বর্তমান | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সৌমিত্র দাস, কাঁথি: ‘আমরা নারী আমরা সব পারি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দেবীর আরাধনায় ৪০০ হাত একজোট হয়েছে খেজুরির সমুদ্র উপকূলবর্তী পাঁচুড়িয়ায়। এবছরও দর্শকদের নজর কাড়তে প্রস্তুতি নিচ্ছেন খেজুরির পাঁচুড়িয়া আগমনী মহিলা সঙ্ঘের সদস্যা মহিলারা। তাঁরা শুধু হেঁশেল ও সংসার সামলান না, মিলেমিশে পুজোরও আয়োজন করেন। সঙ্ঘের পুজো এবার তৃতীয় বর্ষ। এখানকার পুজোয় নারীরাই সর্বেসর্বা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাঁদা তোলা থেকে শুরু করে পুজোর সমস্ত আয়োজন, প্রসাদ বিতরণ, অতিথি আপ্যায়ন, বিসর্জনী যাত্রা, সিঁদুর খেলা, সবেতেই প্রমীলা বাহিনী শেষ কথা। প্রথম বছরই দেড় শতাধিক মহিলা পুজোয় শামিল হয়েছিলেন। এবার সদস্যা সংখ্যা ২০০ ছুঁয়েছে।
পুজোকে কেন্দ্র করে ক’টা দিন পাঁচুড়িয়া এলাকায় যেন আনন্দের হাট বসে যায়। নানা অনুষ্ঠান ও কর্মসূচিকে ঘিরে আনন্দে মেতে ওঠে আট থেকে আশি। মণ্ডপ ও প্রতিমা যেমন নজরকাড়া হয়, তেমনই আলোকমালায় সেজে ওঠে উৎসব প্রাঙ্গণ। রাখী পূর্ণিমার দিন ধুমধাম করে খুঁটিপুজোও হয়েছে। অথচ তিন বছর আগেও পাঁচুড়িয়ায় দুর্গাপুজো ছিল না। যেতে হতো বিদ্যাপীঠমোড়ে। গ্রামে স্থানীয় শীতলা ও বাসন্তী মন্দিরে অষ্টমী-নবমীর অঞ্জলি দিতেন মহিলারা। এখন নিজেদের পুজোয় অঞ্জলি দেওয়া থেকে শুরু করে চলে চুটিয় আনন্দ উপভোগ করা। পাঁচুড়িয়া ছাড়াও দক্ষিণ কলাগেছিয়া, থানাবেড়িয়া, ওয়াসিলচক, লক্ষণচক, মেহেদিনগর প্রভৃতি গ্রামের মহিলারাও এই পুজোয় যুক্ত হয়েছেন। ১৫ জনের কমিটিতে রয়েছেন খেজুরি আদর্শ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক সমুদ্ভব দাস। সমুদ্ভববাবুই চণ্ডীপাঠ করেন। উদ্যোক্তারা বলেন, আমরা পাঁচুড়িয়া এলাকার কয়েকজন মহিলা একদিন আলোচনা করি, মা দুর্গার পুজোর আয়োজন করার। সিদ্ধান্ত হতেই আমরা কোমর বেঁধে নেমে পড়ি। বাড়ি বাড়ি যাওয়া, চাঁদা তোলা শুরু হয়। পাঁচুড়িয়া তো বটেই, আশেপাশের গ্রামের মহিলারাও খুব উৎসাহী। সদস্যার সংখ্যা হু-হু করে বাড়তে থাকে। পুজো উপলক্ষ্যে নানা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি অ্যামেচার যাত্রা, কচিকাঁচা সহ বিভিন্ন বয়সিদের নিয়ে হয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণী। এছাড়া রয়েছে দিদি নম্বর ওয়ান, ম্যাজিক-শো থেকে শুরু করে নানা অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি। রয়েছে বস্ত্র বিতরণ সহ নানাবিধ সামাজিক কর্মসূচি।-নিজস্ব চিত্র