• পেট্রল পাম্পের ঘটনায় বসিরহাট থেকে ধৃত ৪ 
    বর্তমান | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: শান্তিপুরের কন্দখোলা পেট্রল পাম্পের ঘটনায় বড়সড় সাফল্য পেল পুলিস। মাত্র সাড়ে তিনদিনের মধ্যেই ঘাতক গাড়ি সহ চার অভিযুক্তকে জালে তুললেন তদন্তকারীরা। বুধবার গভীর রাতে বসিরহাট থানা এলাকার হাসনাবাদে হানা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। বৃহস্পতিবার ধৃতদের সকলকে টিআই প্যারেডের আবেদন সহ আদালতে তোলা হয়।

    কন্দখোলা পেট্রল পাম্পে ঘটনার তদন্ত ও গ্রেপ্তারি নিয়ে রানাঘাট পুলিস জেলার সুপার কুমার সানি রাজ বৃহস্পতিবার শান্তিপুর থানায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন। পুলিস সুপার ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সুপার লাল্টু হালদার ও এসডিপিও শৈলজা দাস। পুলিস সুপার বলেন, ঘটনার পর যখন আমরা তদন্তে নামি, তখন প্রথমেই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। তাতে গাড়িটির নম্বর প্লেট কাদা দিয়ে ঢাকা ছিল। ফলে প্রাথমিকভাবে গাড়িটি চেনার কোনও জায়গা ছিল না। ফুটেছে দেখা যায়, গাড়িটি কলকাতার দিকে প্রচণ্ড গতিতে পালাচ্ছে। এরপর আমরা মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতা, দীর্ঘপথে জাতীয় সড়কের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করি। কিন্তু প্রথম থেকেই গাড়িটি এত দ্রুত জাতীয় সড়ক দিয়ে ছুটছিল যে ফুটেজে তার নম্বরপ্লেট বোঝাই যাচ্ছিল না। তবে শেষপর্যন্ত আমরা গাড়িটিকে ‘ট্র্যাক’ করতে পারি। বৃহস্পতিবার বসিরহাট থানা এলাকার হাসনাবাদ থেকে গাড়ি সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার দিন তারা প্রত্যেকেই ছিল ওই গাড়িতে। যেহেতু ধৃতদের টিআই প্যারেড করানো হবে। তাই আপাতত তাদের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে ধৃতরা কুখ্যাত দুষ্কৃতী ও চোর হিসেবেই পরিচিত। 

    পুলিস জানিয়েছে, পেট্রল পাম্পে টাকা না দিয়ে তেল ভরে পালানোর মতো ঘটনাও তারা একাধিকবার ঘটিয়েছে। বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত তারা। দুষ্কৃতীদের ‘ব্যাকগ্রাউন্ড’ জানতে পেরে পুলিস বসিরহাট থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। গ্রেপ্তার চারজনকেই হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আপাতত চারজনের বিরুদ্ধেই ভারতীয় ন্যায়সংহিতার ১০৩ অর্থাৎ খুনের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আটক গাড়িটি কোন কোন অপরাধে ব্যবহার করা হয়েছে, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

    প্রসঙ্গত, ৭ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটা নাগাদ শান্তিপুর থানার কন্দখোলা পেট্রল পাম্পে তেল ভরতে ঢুকেছিল একটি ছোট মালবাহী গাড়ি। সেই গাড়িটিতেই ছিল ধৃত চারজন। প্রায় সাড়ে ৫ হাজার টাকার তেল ভরে গাড়িতে। এরপর হঠাৎই টাকা না দিয়ে গাড়ি নিয়ে চম্পট দিতে উদ্যত হয়। রাত তখন প্রায় আড়াইটে। পাম্পে মাত্র দু’জন কর্মী কর্মরত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে বিশ্বজিৎ দাস গাড়িটি আটকানোর চেষ্টা করেন। সেই সময় বিশ্বজিৎকে পিষে দিয়ে চলে যায় এই গাড়িটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনার পরেই শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পাম্প মালিক। প্রাথমিক পর্যায়ে ধাক্কা খেতে হয়েছিল পুলিসকে। কারণ ঘাতক গাড়িটির নম্বর প্লেট ছিল কাদা দিয়ে ঢাকা দেওয়া। তার থেকেই তদন্তকারীদের অনুমান, ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হয়েছে এই ঘটনা। তারই তদন্তে নেমে মাত্র সাড়ে তিনদিনের মধ্যে বড়সড় সাফল্য পেল রানাঘাট জেলা পুলিস।
  • Link to this news (বর্তমান)