• স্বাস্থ্যভবন থেকে নবান্ন, সাড়ে তিন ঘণ্টার ‘নাটকীয়তা’
    বর্তমান | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর ও কলকাতা: ‘আমরা নবান্নে যাচ্ছি’। বিকেল ৪টের সময় মাইকে ঘোষণা করলেন স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল জুনিয়র চিকিৎসকরা। বিধাননগর কমিশনারেটের পদস্থ কর্তারা বললেন, গাড়ি রেডি! যদিও আন্দোলনকারীরা জানান, তাঁরা যাবেন নিজেদের ভাড়া করা বাসে। আন্দোলনস্থল থেকে বাসের দিকে এগিয়ে গেলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। উলুধ্বনি, স্লোগান, বোতল বাজিয়ে তাঁদের স্বাগত জানালেন সহকর্মীরা। বিকেল ৪টে ৪০ মিনিট। ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার সামনে থেকে বাস ছাড়ল!

    বৈঠকে কী হয়, সেদিকে তাকিয়ে ছিলেন অনেকেই। গ্রিন করিডরের কৌশলেই তাঁদের সেক্টর ফাইভ থেকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় নবান্নে। বিকেল ৫টা ২৩ মিনিট। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলতে বলতে বাস থেকে নামলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সভাঘরে তখন অপেক্ষা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৫ জন জুনিয়র চিকিৎসককে ডাকা হয়েছিল। গিয়েছিলেন ৩০ জনের বেশি। সেই আব্দার মেনে নেয় প্রশাসন। ডেস্কে নথিভুক্ত করা হয় নাম। কিন্তু, বৈঠকে ঢুকলেন না জুনিয়র চিকিৎসকরা। কেন? আলোচনার সময় নাকি লাইভ স্ট্রিমিং করতে হবে! সেই ছুতো ধরে তাঁরা দাঁড়িয়ে রইলেন।

    রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমার বেরিয়ে এলেন বাইরে। তাঁদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বললেন। বেরিয়ে আসেন স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীও। বিচারাধীন মামলায় লাইভ স্ট্রিমিং করা যাবে না বলে তাঁদের জানানো হয়। বিকল্প হিসেবে বৈঠকের ভিডিওগ্রাফি করার কথা জানানো হয়। কিন্তু, তাতেও ‘গোঁসা’। চিকিৎসকরা গেলেন না বৈঠকে। সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিট। মুখ্যসচিব এবং ডিজি সাংবাদিক সম্মেলন করে বিষয়টি জানান। মুখ্যমন্ত্রী অপেক্ষা করছেন বলেও জানানো হয়। তারপরেও জুনিয়র চিকিৎসকদের জন্য অপেক্ষা করতেন থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, সভাঘরে ঢুকলেন না জুনিয়র চিকিৎসকরা! সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট। প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করার জন্য নিজের অফিসে গিয়ে কনফারেন্স রুমে সাংবাদিক সম্মেলন  করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আলোচনার ‘দরজা’ খুলেও রাখেন। তবে, তার বেশকিছুক্ষণ পর সভাঘরের দরজা বন্ধ করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় জুনিয়র চিকিৎসকরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন নবান্নে। সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে চলল সেই ‘নাটক’। অনেকে বলছেন, নবান্নে গেলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে প্রায় দু’ঘণ্টা বসিয়ে রাখলেন, ১৫ জনের বদলে ৩০ জনের বেশি গেলেন, তারপরেও বৈঠকে বসলেন না কেন? শুধু কী লাইভ স্ট্রিমিং? নাকি নেপথ্যে অন্যকিছু? উঠছে সেই প্রশ্নও। 
  • Link to this news (বর্তমান)