• আর জি করে চিকিৎসার গাফিলতিতে রানাঘাটের যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ
    বর্তমান | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আরও একটি মৃত্যু এবং পরিজনদের কান্নায় শোকস্তব্ধ আর জি কর হাসপাতাল চত্বর। জুনিয়রদের চলমান আন্দোলনের আবহে ফের ‘চিকিত্সায় গাফিলতি’র অভিযোগে প্রাণ হারালেন এক তরুণ। বৃহস্পতিবার বিকেলে মৃত নন্দ বিশ্বাসের (২৩) বাবা জ্যোতিষ বিশ্বাস এমনটাই অভিযোগ করেন। ছেলের মৃতদেহ নিয়ে বাবার অভিযোগ, ‘আমার ছেলেকে ৪ দিন হল ভর্তি করেছি। কোনও চিকিত্সা হয়নি বলে আজ ছেলেটা মারা গেল।’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘ডাক্তার আমাকে বলছেন, ঝামেলার জায়গায় কেন এনেছেন? আমি বললাম, তাহলে আপনারা ভর্তি নিলেন কেন? অন্য জায়গায় নিয়ে যেতাম।’

    রানাঘাটের বাসিন্দা নন্দ ২০২০ সাল থেকে দুবাইয়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। গত তিন মাস হল তিনি দেশে ফিরেছিলেন। হঠাত্ই একদিন জ্বর আসে তাঁর। মৃতের ভাই রাজ বিশ্বাস বলছিলেন, ‘মাস তিনেক আগে দুবাই থেকে বাড়িতে আসার পর, একদিন হঠাত্ই জ্বর হয়। তখন আমরা বনগাঁর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখান থেকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। আবার পরিস্থিতি খারাপ হয়। তখন আবার সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর আর জি করে নিয়ে আসি। শুধুমাত্র জ্বর নিয়ে এখানে এল, তারপর দাদা মারা গেল। চিকিত্সার গাফিলতি ছাড়া আর কী বলব!’ 

    মৃতের পরিজনরা তখন বারবার তাঁর পুরনো ছবি মোবাইল থেকে বার করে দেখাচ্ছেন। বলছিলেন, ‘বছর খানেক আগে বিয়ে হয়েছিল নন্দর। এরকম সুঠাম শরীরের ছেলে কীভাবে চারদিনের ভিতরে এভাবে মারা যেতে পারে?’ জ্যোতিষবাবু বলছিলেন, ‘আমি আর আমার স্ত্রী এসে থাকতাম। আমার স্ত্রী বলছিলেন, ডাক্তার এসে স্যালাইন চালিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। তারপর আয়া-নার্স এসে দেখছেন। আজকে সকালে আমি বারবার আয়া-নার্সদের এসে ডাকছিলাম। বলছিলাম, একবার এসে দেখুন, আমার ছেলে অবস্থা খারাপ হচ্ছে। তখন আমাকে রেগে বলছেন, ডাক্তার এলে দেখা হবে। যদি একটু আগে দেখতেন, তাহলে হয়তো বেঁচে যেত।’ পরিস্থিতি বিচার করে, বৃহস্পতিবারই ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বাড়ির লোকেরা।

    এই প্রসঙ্গে আর জি কর হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়। যথাযথ চিকিত্সা হয়েছে। কোনও অভিযোগ থাকলে তাঁরা কর্তৃপক্ষকে বলছেন না কেন?’ এদিন বিকেলের দিকে নন্দর মৃতদেহ টেম্পোতে চাপিয়ে রানাঘাটে নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। সঙ্গে ছিল শুধুই চোখের জল। আর একরাশ অভিযোগ। কিন্তু পুত্রহারা মা-বাবা জানেন না, কার কাছে জাস্টিস চাইবেন! 
  • Link to this news (বর্তমান)