• অন্য এলাকার সম্পত্তি কর, মহিলার আধার দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স ব্যক্তির!
    বর্তমান | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মহেশতলা পুরসভার সম্পত্তি করের নথি। তার ভিত্তিতে খাস কলকাতায় ট্রেড লাইসেন্স দিচ্ছে কলকাতা পুরসভা! কলকাতা পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের এই ‘অভিনব কীর্তি’ সম্প্রতি সামনে এসেছে। এখানেই অবশ্য শেষ নয়! অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্সের আবেদনপত্রের সঙ্গে সচিত্র পরিচয় হিসেবে পেশ করা হয়েছিল হরিদেবপুরের এক মহিলার আধার। অথচ কলকাতা পুরসভা ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করল ঠাকুরপুকুরের এক ব্যক্তির নামে। আক্ষরিক অর্থেই এ যেন উধোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে!  

    কলকাতা পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের কাজকর্ম নিয়ে বিতর্ক অবশ্য আগেও হয়েছে। অতীতে সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে একটি ঠিকানায় একাধিক ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিল কলকাতা পুরসভা।  তারপরও পরিস্থিতির যে কোনও বদল হয়নি, এই ঘটনা তা আরেকবার প্রমাণ করল বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভায় ট্রেড লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার একটি দালাল চক্র এখনও  সক্রিয়। তারাই মোটা টাকার বিনিময়ে ভুয়ো নথি পেশ করে ট্রেড লাইসেন্স পাইয়ে দিচ্ছে ব্যবসায়ীদের। যদিও গত বছর দু’য়েক ধরে পুরসভা অনলাইনেই লাইসেন্স দিচ্ছে। তারমধ্যেই এমন একাধিক সমস্যা হয়েই চলেছে বলে অভিযোগ। 

    আইনত কোনও অবস্থাতেই কলকাতা পুর এলাকার বাইরের কোনও ঠিকানায় ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করতে পারে না কলকাতা পুরসভা। তাহলে কীভাবে মহেশতলা পুরসভার বাসিন্দার সম্পত্তি করের নথি আর হরিদেবপুরের মহিলার আধার দিয়ে ঠাকুরপুকুরের ব্যক্তি ট্রেড লাইসেন্স বাগিয়ে নিলেন? পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স বিভাগ নথি যাচাই এবং ঠিকানা যাচাই না করেই কি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে দিচ্ছে? কলকাতা পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, ‘অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্সের আবেদনপত্র গ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে এই সমস্যার সূত্রপাত। অনলাইনে সাদা কাগজ জমা দিলেও ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু হয়ে যাবে। কারণ মেশিন নথি যাচাই করতে পারে না।’ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রযুক্তিগত সমস্যা নিয়ে কলকাতা পুরসভার এই দাবি সত্যি হলে আগামী দিনে আরও বড়সড় কেলেঙ্কারি হতে পারে। খুব সম্ভবত প্রযুক্তিগত এই ত্রুটির কথা জানা রয়েছে কলকাতা পুরসভায় সক্রিয় দালাল চক্রেরও। তাই তারা এই সুযোগ নিয়ে চলেছে। এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘এমনটা হওয়ার কথা নয়। কলকাতা পুর এলাকার বাইরে কোনও ঠিকানায় আমরা ট্রেড লাইসেন্স দিতে পারি না। এমন হয়ে থাকলে অভিযোগ খতিয়ে দেখে তা বাতিল করা হবে। এমন অভিযোগ আগেও এসেছে। সেগুলি আমরা বাতিল করেছি।’ সেই সঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত ত্রুটিও হতে পারে। সেগুলি মেরামতের চেষ্টা চলছে।
  • Link to this news (বর্তমান)