তিনি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত। তবু পুজোর মুখে পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য জামিনে ছাড়া পাওয়ায় তাঁর গ্রাম ঘোড়াইক্ষেত্রে অনেকেই খুশি।
গ্রেফতারির প্রায় ২৩ মাস বাদে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টে জামিন পান প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক। ওই মামলায় তাঁর স্ত্রী ও ছেলে আগেই জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। এ দিন দুপুরে ঘোড়াইক্ষেত্র গ্রামে মানিকের পৈতৃক বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা গেল, প্রধান দরজায় তালা ঝুলছে। তবে বাড়ির সামনে মাচায় কিছু যুবক ও বৃদ্ধবৃদ্ধা বসে রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সপরিবার কলকাতায় থাকলেও গ্রেফতারির আগে গ্রামের বাড়িতে মানিকের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। গ্রামের সকলের সঙ্গে যোগাযোগও রাখতেন। প্রতি বছরই পুজোয় গ্রামে আসতেন তিনি। ২০২২ সালে দুর্নীতি তদন্ত নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেও গ্রামের পুজোয় এসে অষ্টমীর অঞ্জলি দিয়ে যান তিনি। তার কিছু দিন পরেই গ্রেফতার হন। পরে তাঁর স্ত্রী শতরূপা ও ছেলে সৌমিককেও গ্রেফতার করা হয়।
গ্রাম সূত্রের খবর, মানিকের স্ত্রী ও ছেলে জামিন পাওয়ার পরে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। ছেলে দুই-এক দিন থেকে চলে গেলেও স্ত্রী সপ্তাহখানেক ছিলেন। এ দিন মানিকের প্রসঙ্গে তাঁর এক আত্মীয় পার্থ ভট্টাচার্য বলেন, “গ্রামের প্রতি ওর খুব টান। গ্রামের কিছু কাজ করার ইচ্ছা ওর ছিল। আশা করি, সেগুলো এ বার হবে।” মানিকের পাড়ার পুজোর পুরোহিত অসীম ভট্টাচার্য বলেন, “আমার হাত দিয়েই এত দিন সে অঞ্জলি দিয়েছে। আমাদের বিশ্বাস এ বার পুজোতেও সে গ্রামের বাড়িতে ফিরে অঞ্জলি দেবে।” যদিও মানিকের জামিনের শর্ত হিসেবে তাঁর গতিবিধির উপরে যে নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, তাতে তিনি পুজোয় গ্রামে আসতে পারবেন কি না, তা নিয়েও জল্পনা রয়েছে।
অন্য দিকে, শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম ‘মাথা’ মানিকের জামিন নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও তরজা শুরু হয়েছে। কালীগঞ্জ ব্লকের বাসিন্দা, সিপিএম নেতা দেবাশিস আচার্যের কটাক্ষ, “দিদি-মোদির সেটিংয়ের কথা মানুষ জানে। সিবিআইয়ের ভুলে জামিন পেলেও মানিকবাবু কিন্তু নিরাপরাধ প্রমাণিত হননি।”
বিজেপির সন্দীপ মজুমদার পাল্টা বলেন, “সিবিআই ছিল বলে উনি জেল খেটেছেন। জামিন পেলেও মানুষ ওঁকে ক্ষমা করবে না।”