• অধীরের আস্থাভাজন সহ একাধিক  জনপ্রতিনিধির তৃণমূলে যোগদান
    বর্তমান | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, ডোমকল: রানিনগর-২ ব্লকে বিরোধী শিবিরে ব্যাপক ধস নামল। বহরমপুরের প্রাক্তন সভাপতি অধীর চৌধুধীর ‘আস্থাভাজন’ রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুদ্দুস আলি সহ একাধিক জনপ্রতিনিধি শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। এদিন বিকেলে ইসলামপুরে বিধায়ক সৌমিক হোসেনের বাসভবনে যোগদান পর্বটি হয়। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মুর্শিদাবাদ লোকসভার সাংসদ আবু তাহের খান, রানিনগরের বিধায়ক সৌমিক সাহেব প্রমুখ। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই সমিতি বাম-কংগ্রেস জোট দখল করে। সেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও এক সদস্য এদিন যোগদান করায় বড় ধাক্কা খেল জোট শিবির।

    উল্লেখ্য, তেইশের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রানিনগর-২ ব্লকে বাম-কংগ্রেস জোটের ব্যাপক প্রতিরোধের জোরে কার্যত পর্যুদস্ত হয়েছিল তৃণমূল। ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতি সহ ন’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ছ’টিই গিয়েছিল জোটের দখলে। বছর ঘুরতেই সেই রানিনগর-২ ব্লকেই একবারে ধূলিসাৎ হয়ে পড়ল জোট। মাত্র এক বছরের মধ্যেই সবকটি পঞ্চায়েতই নিজেদের দখলে নিল তৃণমূল। শুধু সবকটি পঞ্চায়েতই নয়, বাম-কংগ্রেস জোটের দখলে থাকা রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুদ্দুস সাহেবকেও নিজেদের দলে টেনে নিল তৃণমূল। তিনি অধীরের আস্থাভাজন সৈনিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত পঞ্চায়েত ভোটে কুদ্দুস জেলে থাকাকালীন লালবাগ সংশোধনাগারে দেখা করতে গিয়েছিলেন অধীরবাবু। সেই কুদ্দুস সহ পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা যোগদান করায় কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ল রানিনগর-২ ব্লকের কংগ্রেস শিবির। ২৭ আসনের রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতিতে ভোটের ফলাফলে বাম-কংগ্রেস জোট ১৪টি আসন দখল করে। পরে অবশ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় জোট। পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতির বোর্ড গঠনের আগেই তিন কংগ্রেস সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। স্থায়ী সমিতির বোর্ড যায় তৃণমূলের দখলে। মাসখানেক আগে পঞ্চায়েত সমিতির বাম-কংগ্রেস জোটের দুই সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮। একের পর এক পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তৃণমূলে যোগ দিলেও এতদিন কংগ্রেসেই ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুদ্দুস আলি। শুক্রবার সেই কুদ্দুস সাহেবই দলবল সহযোগে তৃণমূলে যোগ দিলেন। তাঁর সঙ্গে এদিন তৃণমূলে যোগ দেন চম্পা মণ্ডল নামে পঞ্চায়েত সমিতির আরও এক সদস্য। পাশাপাশি  রানিনগর-১ পঞ্চায়েতের প্রধান লায়লা বিবিও তৃণমূলে যোগ দেন। এছাড়াও রানিনগর-১, কালীনগর-১, কাতলামারি-১ পঞ্চায়েতের  বাম-কংগ্রেস জোট ও বিজেপি থেকে আরও ১১জন পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। সাংসদ আবু তাহের খান বলেন, কংগ্রেসের প্রাসঙ্গিকতা নেই। আজ আবার মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নে শামিল হতে কুদ্দুসভাই সহ রানিনগরের একাধিক কংগ্রেস সদস্য ও নেতৃত্ব তৃণমূলে যোগ দিল। কুদ্দুস সাহেব বলেন, আরও ভালোভাবে মানুষের কাজ করার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নে শামিল হতেই আমি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলাম। রানিনগর-২ ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি মমতাজ বেগম হীরা বলেন, রানিনগর-২ ব্লকে মানুষ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ব্যাপক প্রতিরোধের জেরে কংগ্রেসকে ক্ষমতায় এনেছিল। সেই কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী কুদ্দুস আলি এদিন মানুষের সঙ্গে বেইমানি করে তৃণমূলে যোগ দিল। এই অন্যায় মানুষ মেনে নেবে না।
  • Link to this news (বর্তমান)